গাড়ি বিক্রির কথা বলে প্রতারণা, বন্দরকর্মীসহ গ্রেপ্তার ৬

আমদানি করা গাড়ি বিক্রির কথা বলে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে চট্টগ্রাম বন্দরের তিন কর্মীসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2020, 02:47 PM
Updated : 19 Nov 2020, 02:47 PM

চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বুধ ও বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে সিআইডি কর্মকর্তারা জানান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মহিদুল ইসলাম সরকার নজরুল, মোবারক হোসেন সুমন, আনোয়ার হোসেন, নুরুল আবছার, রুহুল আমিন ও মো. ইউসুফ।

এদের মধ্যে নুরুল আবছার চট্টগ্রাম বন্দরের স্থায়ী নিরাপত্তাকর্মী এবং রুহুল আমিন ও ইউসুফ বন্দরে ‘নো ওয়ার্ক-নো পে’ ভিত্তিতে কাজ করেন।

সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শাহিনুর রহমান হালিম নামে এক ব্যক্তি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে নিলামের মাধ্যমে একটি নোয়া মাইক্রোবাস কেনার জন্য তার বন্ধু রুবেলের মাধ্যমে মোবারক হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মোবারক তাকে বলেন, তার মামা মহিদুল ইসলাম চট্টগ্রাম কাস্টমসের এক কর্মকর্তার ব্যক্তিগত সহকারী। তিনি কম দামে গাড়ি কিনে দিতে পারবেন।

গাড়ি কিনতে গত ৮ জানুয়ারি হালিম মোবারকের সঙ্গে চট্টগ্রাম আসেন এবং সানোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচিত হন, যাক কাস্টমসের সহকারী কমিশনার হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন মোবারক।

সিআইডি কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ জানান, মহিদুল বন্দরের ভেতর গাড়ি দেখানোর জন্য ইউসুফকে ঠিক করেন। ইউসুফ, নুরুল আবছার ও রুহুল আমিনের মাধ্যমে হালিমের এক বন্ধুকে চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতরে নিয়ে গিয়ে একটি মাইক্রোবাস দেখিয়ে আনেন।

গত ১২ জানুয়ারি গাড়ি কেনার জন্য সুমন ক্রেতা হালিমকে নিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের পেছনে যান। সেখানে আগে থেকে একটি প্রাইভেট কারে বসা সানোয়ারকে ১০ লাখ ১৯ হাজার টাকা দেন হালিম।

তিনি জানান, টাকা পাওয়ার পর সানোয়ার গাড়ির কাগজপত্র তৈরি করার কথা বলে সেখান থেকে পালিয়ে যান টাকা নিয়ে। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর হালিম বুঝতে পারেন তিনি প্রতারকের খপ্পরে পড়েছেন।

পরে হালিম ১২ ফেব্রুয়ারি বাদী হয়ে বন্দর থানায় একটি মামলা করেন।

সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা বলেছে, ১০ লাখ ১৯ হাজার টাকা প্রতারণা করে আত্মসাতের পর তা নগরীর জুবিলি রোডের একটি ঘরে বসে ভাগাভাগি করেন তারা।

এর মধ্যে মোবারক দুই লাখ টাকা, মহিদুল এক লাখ ১০ হাজার এবং সানোয়ার বাকি টাকা নিয়ে নেন।

শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয় দেয়া সানোয়ার বা তার কথিত পিএ মহিদুল প্রতারক। তারা বিভিন্ন সময়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়।

এ ঘটনার পর সানোয়ার গাড়ি বিক্রির কথা বলে প্রতারণার অভিযোগে ডবলমুরিং থানায় হওয়া আরেক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন বলে জানান তিনি।

গ্রেপ্তারদের মধ্যে মহিদুল, মোবারক ও আনোয়ার বিকেলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।