‘বাংলাদেশে থাকতে হলে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে স্যালুট দিয়ে চলতে হবে’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য অপসারণে খেলাফত মজলিস নেতার বক্তব্যের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্রলীগ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2020, 05:14 PM
Updated : 17 Nov 2020, 05:17 PM

মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে এই সমাবেশে সংহতি জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব মো. ইউনুছ বলেছেন, “বঙ্গবন্ধুর বাংলায় যদি থাকতে হয়, তাহলে বঙ্গবন্ধুর সব ভাস্কর্যে স্যালুট দিয়ে চলতে হবে, আর না হয় পাকিস্তানে চলে যেতে পার।”

চট্টগ্রাম কলেজ ও হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ ছাত্রলীগ ‘স্বাধীনতাবিরোধী ও উগ্র মৌলবাদী’ গোষ্ঠীর অবমাননাকর বক্তব্য ও ভুল ধর্মীয় ব্যাখ্যার প্রতিবাদে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুছ বলেন, “স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও মৌলবাদী গোষ্ঠী আবার লেজ নেড়ে উঠেছে।

“চরমোনাইদের ঘাড়টা একটু বেশি মোটা, তাই তারা সবখানে ধর্মকে টেনে আনে। সব জায়গায় ধর্ম টেনে আনলে তাদের ঘাড় মটকে দিতে হবে।”

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ বলেন, “মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলো একত্রিত হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলার যে ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, তা আমরা একজন দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে কখনও মেনে নিতে পারি না।”

গণজাগরণ মঞ্চ চট্টগ্রামের অন্যতম উদ্যোক্তা আবৃত্তি শিল্পী রাশেদ হাসান বলেন, “আমরা সহনশীলতা দেখানোর ফলে এসব ধর্মান্ধরা জাতির জনকের ভাস্কর্য অপসারণের দাবি তোলার মতো স্পর্ধা দেখাতে পারে। তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।”

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য অপসারণে ইসলামী দলের নেতা দাবি তোলার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে মঙ্গলবার ছাত্রলীগের প্রতিবাদ সমাবেশে সংগঠনটির সাবেক নেতা নুরুল আজিম রনি।

সমাবেশে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূরুল আজিম রনি বলেন, “যখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে কটুক্তি করা হয়, তখন বাঙালির হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়।

“কিন্তু দুঃখের বিষয় যে রাজনৈতিক সংগঠনের মাধ্যমে সরকার গঠন করা হয়েছে, সেই আওয়ামী লীগের কোনো জেলা-উপজেলার ইউনিট কিংবা যুবলীগ, ছাত্রলীগ রাজপথে নেমে আসেনি, মিছিল মিটিং করেনি। চট্টগ্রামের মাটি থেকে প্রতিবাদ শুরু করায় আয়োজকদের ধন্যবাদ।

“দুইজন মাওলানা এ বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। তাদের দুটি রাজনৈতিক দল রয়েছে। একজন চরমোনাই, ২০০১ সালে চারদলীয় জোটের শরিক দল। অন্যজন মাওলানা মামুনুল হক মামুন আরেকটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। ইসলাম রক্ষার জন্য নয় আসলে তারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে এই বক্তব্য দিচ্ছে।”

রনি বলেন, “শিক্ষা উপমন্ত্রী উগ্রবাদীদের হুঁশিয়ার করায় উনাকে নিয়ে উগ্রবাদী শক্তি হুমকি দিয়ে বক্তব্য দিচ্ছে। এটা চট্টগ্রামের মাটি। এখানে উগ্র মতবাদ ছড়ালো জিহ্বা টেনে নেওয়া হবে।”

ছাত্রলীগ নেতা মায়মুন উদ্দিন মামুন ও আনোয়ার পলাশের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সাধারণ সম্পাদক শিবু প্রসাদ চৌধুরী, আবৃত্তি শিল্পী প্রণব চৌধুরী, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক হাবিবুর রহমান তারেক, আবু সাঈম সুমন, হোসেন আহমদ রুবেল, নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর, নগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইয়াছিন আরফাত কচি, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মনির ইসলাম, জাবেদুল ইসলাম জিতু, মহসিন কলেজ ছাত্রলীগ নেতা কাজী নাঈম প্রমুখ।