মাতারবাড়িতে ২০২৬ সালে জাহাজ ভেড়ানোর আশা

ছয় বছরের মধ্যে জাহাজ ভেড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে কক্সবাজারের মহেশখালীতে ‘মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর’ বাস্তবায়নে প্রথম ধাপের কাজ শুরু হয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2020, 03:31 PM
Updated : 16 Nov 2020, 03:31 PM

চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ সোমবার সাংবাদিকদের জানান, দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের এই প্রকল্পের নকশা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছে।

বন্দর কর্মকর্তারা আগামী ২০২৬ সাল নাগাদ মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরে জাহাজ ভেড়ার আশা প্রকাশ করছেন।

বিকালে বন্দর ভবনে এ মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দর নির্মাণে জাপানের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘নিপ্পন কোয়ে’র সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে আসেন বন্দর চেয়ারম্যান।

১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ হচ্ছে। এই প্রকল্পে ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান। বাকি অর্থের মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লাখ টাকা, পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ দিচ্ছে ২ হাজার ২১৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

বন্দর চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, “মাতারবাড়ি বন্দরের টার্মিনাল নির্মাণ প্রক্রিয়ার নকশা প্রণয়নের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে আজ শুরু হল। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ২০২৬ সালে এই বন্দর চালু করা যাবে।”

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেওয়া প্রকল্পটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে। এর সব নকশা জাপানি বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে হচ্ছে।

এই প্রকল্পের অধীনে সংযোগ সড়কসহ গভীর সমুদ্র বন্দরে ৩০০ ও ৪৬০ মিটার দীর্ঘ দুটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। এর ফলে বিশাল জাহাজ থেকে সরাসরি পণ্য ওঠানামা সহজ হবে।

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, প্রাথমিকভাবে একটি কনটেইনার টার্মিনাল এবং একটি বহুমুখী পণ্য ওঠানো–নামানোর টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন বাড়ার সঙ্গে এই বন্দরের কার্যক্রমও ধারাবাহিকভাবে বাড়ানো হবে।

বন্দর কর্মকর্তাদের মতে, গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর এ সমুদ্রবন্দর নির্মাণের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাপানি প্রতিষ্ঠান ‘নিপ্পন কোয়ে’র সঙ্গে চুক্তি সই হয়।

মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক এবং চট্টগ্রাম বন্দর সদস্য (প্রশাসন) মো. জাফর আলম বলেন, গভীর সমুদ্র বন্দরটিতে বড় জাহাজ ভেড়ানো যাবে। আট থেকে ১০ হাজার কনটেইনার পরিবহনের উপযোগী কনটেইনার জাহাজ ভেড়ানো যাবে এই বন্দরে। আর সাধারণ পণ্যবাহী ৮০ হাজার টন ধারণক্ষমতার জাহাজও ভেড়ানো যাবে।

প্রকল্পের সময়সূচি অনুযায়ী, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আগামী জুনের মধ্যে প্রকল্পের নকশা প্রণয়ন করবে। এরপর জুলাই থেকে ১২ মাসের মধ্যে টার্মিনাল নির্মাণের জন্য দরপত্রের খসড়া প্রণয়ন করবে। টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু হবে ২০২২ সালের জুলাই মাসে।

দরপত্রে নির্বাচিত ঠিকাদারদের জন্য টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শেষ করার সময়সীমা থাকবে ২০২৫ সাল। সব কাজই তদারকি করবে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান।

প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের দলনেতা হিরোশি ওতানি বলেন, প্রথম ধাপে নকশা প্রণয়ন, দরপত্র তৈরিতে সহায়তা ও নির্মাণকাজ তদারকি এবং দ্বিতীয় ধাপে বন্দরের যন্ত্রপাতি ও পরিচালন কাজের জলযান ক্রয়ের সেবা দেওয়া হবে। জাপানের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি যাতে ব্যবহার করা যায় তা প্রাধান্য দেওয়া হবে।