সুদীপ্ত হত্যার আসামির উপর হামলা: ৮ জন কারাগারে

চট্টগ্রাম আদালত ভবনে ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যা মামলার আসামির ওপর অন্য আসামিদের হামলার ঘটনায় করা মামলায় আট আসামিকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Nov 2020, 03:19 PM
Updated : 5 Nov 2020, 03:19 PM

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মহিউদ্দিন মুরাদ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়।

মামলার বাদী মোক্তার হোসেনের আইনজীবী শাহেদুল আজম শাকিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মামলাটির ১৫ জন আসামির মধ্যে আটজন এদিন আত্মসমর্পণ  করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত তা নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।

ওই আটজনের মধ্যে মো. মাঈনুদ্দিন হানিফ, খাইরুল নুর ইসলাম ওরফে খায়ের, আমির হোসেন প্রকাশ বাবু, বাপ্পি ও পারভেজের নাম জানাতে পেরেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ হাসান।

এর আগে এ মামলার আরেক আসামি শরীফ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কয়েকদিন আগে তিনি জামিন পেয়েছেন।

গত ১২ অক্টোবর ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যা মামলার আসামি মোক্তার হোসেন আদালতে হাজির দিয়ে বের হওয়ার সময় মামলার অন্য আসামিরা তার ওপর হামলা চালায়।  

পরে মোক্তার বিচারকের এজলাসে আশ্রয় নিয়ে রক্ষা পান। সেদিন বিচারককে বিষয়টি জানালে তিনি মোক্তারকে কোতোয়ালি থানায় গিয়ে মামলা করার নির্দেশ দেন।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের এজলাসের বাইরে বারন্দায় ওই হামলার ঘটনা ঘটে।

আহত মোক্তার সেদিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছি। এতে তারা ফেঁসে যেতে পারে এই ভয়ে আমার উপর হামলা হয়েছে। হামলাকারীদের আমি চিনি। তারা ১২ জনই মামলার আসামি।”

পরে মোক্তার হোসেন বাদী হয়ে ১৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।

২০১৭ সালের ১৮ অক্টোবর আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মোক্তার ‘বড় ভাইদের নির্দেশে’ সুদীপ্তকে হত্যা করা হয় জানিয়ে জড়িত ১২-১৫ জনের নাম বলেন। নিজে অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করলেও তিনি নির্দেশদাতার ‘নাম জানেন না’ বলে দাবি করেছিলেন।

সুদীপ্তকে হত্যা করার সময় তাকে মারধরের ঘটনা ভিডিও করার দায়িত্ব ছিল আসামি মোক্তারের ওপর। সুদীপ্তর মৃত্যুর পর সেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর সকালে নগরীর দক্ষিণ নালাপাড়ার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয় নগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাসকে। মঙ্গলবার হত্যাকাণ্ডের তিন বছর পূর্তি হচ্ছে।

সুদীপ্তর বাবা মেঘনাথ বিশ্বাস বাদী হয়ে সদরঘাট থানায় অজ্ঞাত সাত-আটজনকে আসামি করে যে হত্যা মামলা করেছিলেন, এক বছর পর তারই আবেদনে আদালত এর তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইকে দেয়।

হত্যাকাণ্ডের জন্য ছাত্রলীগের একাংশ লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুমকে দায়ী করলেও গ্রেপ্তার কারও জবানবন্দিতে তার নাম আসেনি; এক ‘বড় ভাই’ হুকুমদাতা ছিলেন বলে তাদের ভাষ্য।

গত বছরের ১২ জুলাই গ্রেপ্তার মিজান জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে মাসুমের নাম বলার পর তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তিনি ছাড়াও এ মামলায় আরও ১৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন, যারা সবাই মাসুমের অনুসারী বলে পরিচয় দিয়েছেন। এদের মধ্যে চারজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুরনো খবর