পার্বত্য নারীদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতের তাগিদ

পার্বত্য চট্টগ্রামের নারীদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা গেলে অল্প সময়েই এই অঞ্চল বিভিন্ন সূচকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে বলে চট্টগ্রামের এক আলোচনায় মত এসেছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2020, 04:01 PM
Updated : 21 Oct 2020, 04:01 PM

বুধবার মোটেল সৈকতে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আয়োজিত পাঁচ দিনের এক কর্মশালায় অতিথি ও অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্যে এ মত আসে।

‘আওয়ার লাইভস, আওয়ার হেলথ, আওয়ার ফিউচার’ স্লোগান নিয়ে ‘এমএইচএম ফ্রেন্ডলি ওয়াশ ফ্যাসিলিটিস এন্ড বাজেট ট্যাপিং এট স্কুলস’ বিষয়ক পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, দারিদ্র, অসুখ-বিসুখসহ বিভিন্ন সূচকে তিন পার্বত্য জেলা পিছিয়ে আছে। সব জায়গায় নয় তবে পাহাড়ে কিছু পকেট আছে যারা বেশি পিছিয়ে।

“পাহাড়ে মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা, তাই নারীরা অগ্রাধিকার পায় বলে ধারণা ছিল। কিন্তু আমরা বাইরে থেকে যা মনে করি তা নয়। হেডম্যান-কারবারিদের মধ্যে নারীদের প্রতিনিধিত্ব এখনও কম। মাতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থা হলেও নেতৃত্বে এবং ক্ষমতায়নে নারীরা পিছিয়ে। উল্টো নারীদের সামাজিক নানা বঞ্চনা প্রকট।”

মিজানুর বলেন, “পাহাড়ের নারীদের মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত করা গেলে আর কিছুই লাগবে না। তারা অল্প সময়েই এগিয়ে যাবে। পাহাড় পিছিয়ে থাকলে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকবে। বৈচিত্রই সৌন্দর্য্য। সবাইকে ধারণ করতে পারাটাই আনন্দের।”

অনন্যা কল্যাণ সংগঠন (একেএস) এর বান্দরবানের নির্বাহী পরিচালক ডনাই প্রু মার্মা বলেন, পাহাড়ের নারীরা অনেক সময় পরিশ্রম করেও কাঙ্ক্ষিত মূল্যায়ন পায় না। “নারীদের অধিকার নিশ্চিত দীর্ঘ সময় ধরে আমরা সংগ্রাম করে চলেছি।

বর্তমানে নারীর নিরাপত্তাসহ নানা বিষয় আবারো সামনে চলে এসেছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহায়তা করলে নারী আন্দোলনের কর্মীদের পক্ষে নারী অধিকার নিশ্চিত করা সহজ হয়।”

বিএনপিএসের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সঞ্জয় মজুমদার বলেন, তিন পার্বত্য জেলায় ১৫০টি উচ্চ বিদ্যালয় এবং ৩০০টি গার্লস ক্লাবের মাধ্যমে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

নারীর স্বাস্থ্য ও মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং নারীর প্রতি নির্যাতন বন্ধে ‘আওয়ার লাইভস, আওয়ার হেলথ, আওয়ার ফিউচার’ প্রকল্পের পাঁচ বছর মেয়াদি কার্যক্রম সহযোগী সংগঠনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস)। 

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও সিমাভি নেদারল্যান্ডসের অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে তিন পার্বত্য জেলায় ১০টি সংস্থা বাস্তবায়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। সহযোগীয় সংগঠন গুলো হলো- জাবারাং, কেএমকেএস, তৃণমূল, পোগ্রেসিভ, টংগ্যা, হিল ফ্লাওয়ার, উইভ, একেএস, গ্রাউস এবং তহজিংডং।

সহযোগী সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ও প্রকল্প সমন্বয়কারীদের জন্য ‘এমএইচ এম ফ্রেন্ডলি ওয়াশ ফ্যাসিলিটিস এন্ড বাজেট ট্যাপিং এট স্কুলস’ বিষয়ক পাঁচদিনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।