মঙ্গলবার প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা কাজী ইনামুল হক দানুর সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
নগরীর চকবাজার জয়নগর এলাকায় আয়োজিত স্মরণ সভায় মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “কাজী ইনামুল হক দানু মুক্তিযুদ্ধের একজন সম্মুখ যোদ্ধা। আগ্রাবাদের আমেরিকান এক্সপ্রেস অপারেশনে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। জয়নগর বাসায় থেকে ছোট্ট একটি প্রেসে বসে মুক্তিযোদ্ধাদের অপারেশনের পরিকল্পনা তৈরি করতেন। এই নির্দেশনা নিয়ে আমরা কাজ করেছি।
“তিনি সব সময় সাহসের সাথে সকল দুঃসময় মোকাবেলা করেছেন। ভুলে গেলে চলবে না, আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে দাবি করি কজন এই বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের খবর রাখি? এর উত্তর দিতে হলে আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শানিত হতে হবে।”
নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, “কাজী ইনামুল হক দানু জীবনের সবটুকু অংশই আওয়ামী লীগের জন্য এবং দেশের জন্য উৎসর্গ করে গেছেন। মহান স্বাধীনতা আন্দোলনে তার ভূমিকা অবিস্মরণীয়।
“ছাত্রজীবন থেকে দানু ভাই সাহসী ছাত্রনেতা, স্বাধীনতা আন্দোলনসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে দানু ভাই ছিলেন নেতৃত্বের অগ্রভাগে। জনগণকে সাথে নিয়ে স্বাধীনতা অর্জনের পথে লাগাতার সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে বৃহত্তর চট্টলাজুড়ে যারা অনন্য ভূমিকা পালন করে গেছেন, নিঃস্বার্থভাবে সাহসিকতার সাথে কঠিন দুঃসময়ের মোকাবেলা করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম কাজী ইনামুল হক দানু।”
নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আসন্ন সিটি নির্বাচনের মেয়র পদপ্রার্থী এম. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে আজীবন রাজনীতি করে গেছেন। তিনি কখনও অন্যায়ের সাথে আপস করেননি। কাজী ইনামুল হক দানুকে আমাদের ধারণ করতে হবে রাজনৈতিক জীবনে।”
এর আগে প্রয়াত দানুর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় নগর আওয়ামী লীগ। নগর যুবলীগ আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চুর নেতৃত্বে যুবলীগ নেতাকর্মীরা কবরেও ফুল দেন।
১৯৬৮ সালের নভেম্বরে চকবাজার অলি বেগ খাঁ মসজিদের মোড়ে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মোনায়েম খাঁর গাড়ির গতিরোধ করে জুতা নিক্ষেপ করেন ছাত্রলীগ নেতা কাজী ইনামুল হক দানু। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার দানু হয়েছিলেন রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আসামি।
১৯৭১ সালে ভারতের দেরাদুনে প্রশিক্ষণ শেষে চট্টগ্রাম শহরে বিভিন্ন অপারেশনে অংশ নেন বিএলএফ ইস্টার্ন জোনের গেরিলা কমাণ্ডার দানু।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টের পর মৌলভি সৈয়দ ও মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রতিশোধ লড়াইয়ে শামিল হন দানু। পরে নগর যুবলীগ সভাপতি, নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সবশেষ ২০০৬ সালের কাউন্সিলে হন সাধারণ সম্পাদক।
২০১৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান দানু।