দখল-ভরাটে কর্ণফুলী সরু হয়ে অর্ধেক: জরিপ

দখল ও ভরাটের কারণে কর্ণফুলী নদীর প্রশস্ততা গত ছয় বছরে অর্ধেকে নেমে এসেছে দাবি করে মেরির্নাস র্পাক, সোনালী মৎস্য সমিতির ইজারা বাতিলসহ অবৈধ সব স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রামের একটি সংগঠন। 

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2020, 02:22 PM
Updated : 21 Sept 2020, 02:24 PM

সোমবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের পক্ষ থেকে এই দাবি জানানো হয়।

সংগঠনটি সংবাদ সম্মেলনে ‘কর্ণফুলী দখল জরিপ প্রতিবেদন ২০২০’ প্রকাশ করে। এতে শাহ আমানত সেতু থেকে ফিরিঙ্গিবাজার মনোহরখালী পর্যন্ত এলাকায় নদীর প্রশস্ততা কমে যাওয়ার তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০১৪ সালে নদীর শাহ আমানত সেতু এলাকায় প্রস্থে ছিল ৮৬৬ মিটার, বর্তমানে তা ভাটার সময়ে দাঁড়িয়েছে ৪১০ মিটার, আর জোয়ারের সময় ৫১০ মিটার।

রাজাখালী খালের মুখে প্রশস্ততা ৪৬১ মিটার পাওয়া গেছে, যা আগে ছিল ৮৯৮ মিটার। মেরিনার্স পার্ক এলাকায় ৮৫০ মিটার আছে, আগে ছিল ৯০৪ মিটার।

গত ৩০ অগাস্ট থেকে ২১ দিন এ জরিপ চালানো হয়। বিএস শিট, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক, চট্টগ্রাম বন্দর প্রণীত কৌশলগত মহাপরিকল্পনা ২০১৪ এর সঙ্গে তুলনা করে এই জরিপ করা হয়।

ফাইল ছবি

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান। 

জরিপ পরিচালনাকারী কমিটির পক্ষে আহ্বায়ক সাদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এম আলী আশরাফ, কর্ণফুলী গবেষক অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, অধ্যাপক নোমান আহমেদ সিদ্দিকী ছাড়াও চট্টগ্রাম বিশ্বিবদ্যালয়ের অধ্যাপক মনজুরুল কিবরীয়া ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ উপস্থিত ছিলেন।

আলী আশরাফ বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সোনালী মৎস্য আড়তসহ বেশকিছু ইজারা দিয়েছে অবৈধভাবে। চাক্তাই খালের পশ্চিম পাশ থেকে ফিরিঙ্গিবাজার পর্যন্ত মেরিনার্স পার্ক পুরোটাই নদী দখল করে গড়ে উঠেছে।”

এতে শাহ আমানত সেতুও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

“শাহ আমানত সেতুর পিলার পড়েছে একেবারে নদীর মূল স্রোতধারার মধ্যে। ফলে সেখানে বালি জমছে। ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে সেতুর একটি পিলারকে নদীর ঘাট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব কারণে সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। পানির স্রোতের চাপ সামাল দিতে হচ্ছে এসব পিলারকে। এতে বন্যা বা ঘুর্ণিঝড়ের সময় সেতুর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।”

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, নদী তীর কোনোভাবেই ইজারা দেওয়া যায় না। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ বারবার বিভিন্ন সংস্থাকে ইজারা দিয়ে যাচ্ছে। 

নদী রক্ষায় ইজারা বাতিল করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নিয়মিত ড্রেজিংসহ বিভিন্ন সুপারিশ করেছে সংগঠনটি।

আলীউর বলেন, “বন্দরকে ঝুঁকিমুক্ত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপের সাথে নদীর পাড় স্থায়ীভাবে চিহ্নিত করে মেরিনার্স সড়কে প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ এবং নদীর অবৈধ দখল চিহ্নিত করে উচ্ছেদ অভিযান আবারও চালু করতে হবে।”