আহমদ শফীর মাদ্রাসায় ছেলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানিকে অপসারণসহ ছয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছে মাদ্রাসার একদল শিক্ষার্থী। 

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Sept 2020, 03:38 PM
Updated : 16 Sept 2020, 03:59 PM

মাদ্রাসার ভেতরে বিক্ষোভকারীরা গত জুনে হাটহাজারী মাদ্রাসার সহকারী পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরীর অনুসারী বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার একদল শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ শুরু করে। 

বিক্ষোভের বিষয়ে হাটহাজারী মাদ্রাসার পরিচালকদের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসার বাইরে এলে পুলিশ তাদের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা জানান, দুপুরে হঠাৎ করেই কয়েকশ শিক্ষার্থী মাদ্রাসার ভেতরে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক (শিক্ষা) আনাস মাদানির পদত্যাগ দাবি করে শ্লোগান দিতে থাকে। এসময় তারা ছয়দফা দাবিও তুলে ধরে। 

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আনাস মাদানির কক্ষ এবং জুনাইদ বাবুনগরীর পদে নিয়োগ পাওয়া শেখ আহমদের কক্ষও ভাংচুর করে।

এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধরা মাদ্রাসার সামনে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে অবস্থান নেয়। তখন পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়। 

এরপর বিক্ষুব্ধরা মাদ্রাসার মূলফটকে তালা লাগিয়ে দেয়। ভেতরে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল।  

ঘটনাস্থলে থাকা চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার (উত্তর) মশিউদ্দৌলা রেজা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পুলিশ মাদ্রাসার বাইরে অবস্থান নিয়ে আছে। এখনও পর্যন্ত কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।”

বিক্ষুব্ধদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আনাস মাদানির পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে তারা মাদ্রাসার ভেতরে বিক্ষোভ করে। তারা বিভিন্ন দাবি সম্বলিত একটি লিফলেটও বিতরণ করেছে বলে জেনেছি।”

বিক্ষূব্ধদের বিলি করা লিফলেটে দাবির মধ্যে রয়েছে- অবিলম্বে আনাস মাদানিকে অপসারণ, মাদানি কর্তৃক অব্যাহতি দেওয়া তিন শিক্ষককে পুনর্বহাল, আনাসের নিয়োগ দেওয়া সব ‘অযোগ্য ও বদ আখলাকের’ শিক্ষক ও স্টাফকে ছাঁটাই, অসুস্থ পরিচালক আহমদ শফীকে সম্মানজনকভাবে অব্যাহতি দিয়ে নতুন একজনকে নিয়োগ এবং মাদ্রাসার ছাত্রদের উপর সব ধরনের জুলুম ও হয়রানি বন্ধ করা।

দেশে কওমি শিক্ষার নেতৃত্বদাতা প্রতিষ্ঠান হাটহাজারী বড় মাদ্রাসায় সাত হাজারের বেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করে।

দীর্ঘদিন ধরে এর মহাপরিচালকের পদে থাকা আহমদ শফিকে দেশের কওমি শিক্ষার্থীরা ‘বড় হুজুর’ বলে সম্বোধন করেন। ৯৫ বছরের বেশি বয়সী শফীই ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলন চালিয়ে আসা হেফাজতে ইসলামের সর্বোচ্চ নেতা।

আহমদ শফির বয়স হওয়ায় এই মাদ্রাসার কর্তৃত্ব নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়।

গত জুন মাসে মাদ্রাসার শুরা কমিটির বৈঠকে জুনাইদ বাবুনগরীকে সহকারী পরিচালেকের পদ থেকে সরিয়ে শেখ আহমদকে নিয়োগ দেওয়ার পর আহমদ শফীর সমর্থকদের সঙ্গে বাবুনগরী পক্ষের বিরোধ প্রকাশ্য হয়।

তারই জের ধরে বুধবার মাদ্রাসাটিতে এই বিক্ষোভ হয় বলে স্থানীয়রা বলছেন।