নিয়ম না মানলে হকারদের জিনিসপত্র নিলামে তোলার হুঁশিয়ারি সুজনের

রাস্তার ওপর থেকে হকারদের জিনিসপত্র সরানো না হলে সেগুলো জব্দ করে নিলামে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Sept 2020, 04:22 PM
Updated : 6 Sept 2020, 04:22 PM

রোববার বিকালে তিনি নগরীর নিউ মার্কেট, স্টেশন রোড, ফলমণ্ডি, চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স এলাকা ও স্ট্যান্ড রোড পরিদর্শন করেন।

নিউ মার্কেট এলাকায় সড়কের অংশ বিশেষ দখল করে হকারদের বসে থাকতে দেখে এবং ফুটপাতে বড় বড় চৌকি বসিয়ে পণ্য বিক্রি করতে দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সুজন।

হকারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “তোমাদের সাথে কী কথা হয়েছিল? যখন বলেছিলাম, তখন সবাই হাত তুলে রাজি হয়েছিলে না? এখন রাস্তায় বসে আছ কেন?

“রাস্তায় কাউকে বসতে দেওয়া হবে না। রাস্তা মালামাল রেখে বেচাকেনার জন্য না। নগরবাসী হোল্ডিং ট্যাক্স দেয়। রাস্তা তাদের চলাফেরার জন্য। সেখানে বসে পণ্য বিক্রি করবে- তা হবে না।”

সেখানে উপস্থিত সম্মিলিত হকার্স ফেডারশনের সভাপতি মিরন হোসেন মিলনসহ কয়েকজনের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করে সুজন বলেন, নিষেধ করার পরও সড়কে চৌকি বসিয়ে, বাঁশ ও কাঠ দিয়ে অস্থায়ী স্থাপনা ও ছাউনি চলাফেরার পথ আটকে ব্যবসা করছে হকাররা।

“ফুটপাতের জায়গায় চলাচলের পথে বড় বড় চৌকি বসিয়েছে- এ আচরণ সহ্যের সীমা অতিক্রম করেছে। তাদের নির্মাণ করা স্থাপনা ও চৌকিগুলো সরিয়ে না ফেললে ওগুলোকে জব্দ করে নিলামে তোলা হবে। কারণ হকার নেতাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে আমি যে ছাড়গুলো দিয়েছি তা কেউ যদি দুর্বলতা মনে করেন, তাহলে তাদের জন্য কঠোর দণ্ড অপেক্ষা করছে।”

সুজন বলেন, “মানুষের চলাচলের পথে কাঁটা হবেন না। আমি কোনোভাবেই পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদের পক্ষে নই। তবে মানুষের চলাচলের পথে কোনো প্রতিবন্ধকতা সহ্য করা হবে না।”

পরে হকার সমিতির নেতাদের কয়েকজন সব শর্ত মেনে ফুটপাতে ব্যবসা করবেন বলে প্রশাসককে আশ্বাস দেন।

এর আগে ২৪ অগাস্ট হকার সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে নগরীর ফুটপাতে হকারদের জন্য বিকাল ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন প্রশাসক।

ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়- হকাররা নগরীর ফুটপাতে কে কোন স্পটে বসবে তা হকার সমিতির নেতারা নির্ধারণ করবেন। রাস্তার দু’পাশের পরিবর্তে শুধু একপাশে বসা যাবে। বসার স্থান মার্কিং করে দেবে সিটি করপোরেশন। ফুটপাতের একাংশ চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। ‍ফুটপাতে ও রাস্তায় কোনো অবকাঠামো থাকবে না এবং তালিকাভুক্ত হকারদের ব্যাজ ও ইউনিফর্ম থাকবে।

রোববার স্টেশন রোডের নুপুর মার্কেটের সামনে পাবলিক টয়লেট নির্মাণের কাজ আপাতত বন্ধ রাখতে এবং নকশা অনুযায়ী কাজ হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন প্রশাসক।

নগরীতে যেখানেই নাগরিক দুর্ভোগ ও বেসামাল অবস্থা দৃশ্যমান, সেগুলোর সমাধানে বিরতিহীনভাবে ‘অ্যাকশন’ চলবে জানিয়ে সুজন বলেন, “যেখানে সড়ক মেরামত, খানাখন্দ ভরাট, পরিচ্ছন্নতা ও সড়কবাতির কাজগুলো হচ্ছে সেগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচর্যায় সিটি কর্পোরেশনের পাশাপাশি নগরবাসীরও সামাজিক দায়িত্ব রয়েছে।

“এখনো দেখছি বিভিন্ন জায়গায় যত্রতত্র আবর্জনা পড়ে আছে। যে খানা-খন্দগুলো মেরামত করা হয়েছে সেগুলোও আগের অবস্থায় ফিরে গেছে এবং সড়কে ও ফুটপাতে বেঁধে দেয়া টাইমফ্রেম ও নিয়ম-নীতি কিছুই যথাযথভাবে মানছে না।”

চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স এলাকা পরিদর্শনের সময় মার্কেটের মুখে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জিনিসপত্র রেখে চলাচলের পথ সঙ্কুচিত করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এক দিনের মধ্যে তা সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন সুজন।

সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুফিদুল আলম, প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির সভাপতি সহিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, ফলমণ্ডি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, হোসেন শহীদ সরওয়ারদী এসময় উপস্থিত ছিলেন।