চবিতে অনলাইন ক্লাস শুরু হচ্ছে রোববার, উৎকণ্ঠায় শিক্ষার্থীরা

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে রোববার থেকে অনলাইনে ক্লাস শুরু করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Sept 2020, 08:26 PM
Updated : 5 Sept 2020, 08:26 PM

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮টি বিভাগ ও পাঁচটি ইনস্টিটিউট অনলাইনে ক্লাস নিতে প্রস্তুতি নিয়েছে। তবে ইন্টারনেট সংযোগ ও প্রয়োজনীয় ডিভাইস না থাকায় ক্লাসে উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কায় আছেন শিক্ষার্থীরা। ক্লাসে উপস্থিত না থাকতে পারলে ‘ক্ষতি পুষিয়ে নিতে’ বিকল্প খুঁজছেন তারা।

নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার তারাকান্দি গ্রাম থেকে ইতিহাস বিভাগের ছাত্র আজিজুর হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাড়িতে ফোনের নেটওয়ার্ক ভালো মতো পাওয়া যায় না। ঘরে বসে অনলাইনে ক্লাস করা সম্ভব না।

“বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জানতে পেরেছি ক্লাসগুলো রেকর্ড করা থাকবে। সেগুলো ডাউনলোড দিয়ে আপাতত লেকচারগুলো তুলে নেওয়ার কথা ভাবছি।”

নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলার দুর্গম এলাকা বিশ্বনাথপুর গ্রাম থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র প্রত্যয় নাফাক বলেন, “অনলাইন ক্লাস করার জন্য প্রয়োজনীয় ডিভাইস অনেক স্টুডেন্টের নেই। আবার আমাদের মতো যারা গ্রামে অবস্থান করছে, এসব এলাকায় কথা বলার মতো নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। অনলাইন ক্লাস শুরু হলে সবাই ক্লাস থেকে বঞ্চিত হব। এখন ক্ষতি পু্ষিয়ে নিতে বিকল্প পন্থা অবলম্বন করতে হবে।

“রেকর্ডেড ক্লাসগুলো সংগ্রহ করতে হবে অথবা বন্ধুদের কাছ থেকে ফোনের মাধ্যমে লেকচারগুলো সংগ্রহ করতে হবে।”

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার বটতলী গ্রামের চলন্ত চাকমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গ্রামে ঠিকমতো নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। এ পরিস্থিতিতে অনলাইনে রেগুলার ক্লাস করা সম্ভব না।

“ক্লাস শুরু হলে বুঝতে পারব কতটা সুফল পাওয়া যাবে। যেই ক্লাসে উপস্থিত থাকতে পারব না সেগুলো নিয়ে কী করব তা নিয়ে চিন্তায় আছি।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অনলাইনে ক্লাস নিতে সবগুলো বিভাগ ও ইনস্টিটিউট প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

“আগামীকাল রোববার হতে ক্লাস শুরু হবে। সেখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করার চেষ্টা করা হবে। তবে ইন্টারনেট সংযোগ কিংবা নেটওয়ার্কের যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো তো আমাদের সমাধান করা সম্ভব না। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নিজ উদ্যোগে লেকচারগুলো সংগ্রহ করতে হবে।”

তিনি বলেন, ডিভাইস কেনার আর্থিক সক্ষমতা নেই এ রকম চার হাজার শিক্ষার্থীর তালিকা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে পাঠানো হয়েছে।

“আশা করি ডিভাইস সংকটের সমাধান খু্ব শিগগিরই হবে। এতে করে অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার বৃদ্ধি পাবে।”

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর ১৯ মার্চ থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ। এরপর প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস পেরিয়ে গেছে।