জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা এবার হচ্ছে না

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্মাষ্টমী উৎসবে এবার শোভাযাত্রা হবে না।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2020, 06:04 PM
Updated : 10 August 2020, 06:14 PM

সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশের এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।

সেখানে বলা হয়, ধর্মীয় বিধি মেনে পূজা ও প্রার্থনায় এবারের আয়োজন সাজানো হয়েছে। তিন দিনের উৎসব শুরু হবে মঙ্গলবার।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দে বলেন, “করোনাকালে সব আয়োজনই হবে সীমিত পরিসরে। করোনা থেকে সুরক্ষায় সারাদেশে রাজপথে জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুধু মন্দিরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পূজা হবে।

“উৎসবের খরচের অর্থ দিয়ে সারাদেশে নগর, জেলা ও উপজেলায় করোনাকালীন হতদরিদ্র, নিম্ন মধ্যবিত্ত অসহায় পরিবারের মাঝে ও অনাথালয়ে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হবে এবং চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে পরিষদের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও রাউজানের পৌর মেয়র দেবাশীষ পালিত বলেন, “দীর্ঘ ৩৮ বছর যাবত আমরা চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমী উৎসব উদযাপন করে আসছি। শ্রী কৃষ্ণের জন্মতিথি উপলক্ষে জন্মাষ্টমী সাড়ম্বরে পালন মূলত চট্টগ্রাম থেকে শুরু করা হয়েছিল।

“বিগত বছরগুলোতে চট্টগ্রামে আয়োজিত জন্মাষ্টমী উৎসবে প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতিসহ রাষ্ট্রীয় ও বিদেশি গুরুত্বপূর্ণ অতিথিরাও অংশগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু করোনার কারণে এবার সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও অনাড়ম্বরভাবে উৎসব পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।”

স্বাস্থ্যবিধি মানতে এবার মন্দিরের প্রবেশদ্বারে ভক্ত-দর্শনার্থীদের জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মন্দির কর্তৃপক্ষ হাত ধোয়া এবং স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থাও গ্রহণ করবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

পাশাপাশি ভক্ত ও পুরোহিত উভয়কেই মাস্ক পরতে এবং হ্যান্ডস গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে। ভক্তদের সবাইকে পরস্পর থেকে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কোনো অবস্থাতেই জনসমাগম করে মন্দিরের বাইরে কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না।

এদিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন জন্মাষ্টমী উপলক্ষে এক বার্তায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “শ্রীকৃষ্ণ আজীবন শান্তি ও মানব কল্যাণের আরাধনা করেছেন। সমাজ থেকে অন্যায়-অবিচার, অত্যাচার, নির্যাতন, জুলুম ও হানাহানি দূর করে মানুষে-মানুষে অকৃত্রিম ভালোবাসা ও সম্প্রীতির বন্ধন গড়ে তোলাই ছিল শ্রীকৃষ্ণের মূল দর্শন।

“সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের ঐতিহ্য। আবহমান কাল থেকে এ দেশে সকল ধর্মের অনুসারীরা পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করে আসছেন, এই ঐতিহ্য আমাদের অক্ষুণ্ন রাখতে হবে।”

পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বিভিন্ন অনাথ আশ্রমে খাদ্যসামগ্রী বিতরণের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হবে। এরপর সন্ধ্যা ৭টায় গীতাপাঠ ও সন্ধ্যা আরতি, রাত ৮টায় দেশ, জাতি ও বিশ্বমানবের মঙ্গল কামনায় সমবেত প্রার্থনা এবং রাত ১২টায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী পূজা হবে।

বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় গীতাপাঠ ও সন্ধ্যা আরতি, ৮টায় পঞ্চতত্ত্ব ভজন ও নামসংকীর্ত্তন এবং বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় রাধাকৃষ্ণের ভোগ ও পূজা, সন্ধ্যা ৭টায় গীতাপাঠ, সন্ধ্যা আরতি ও নামসংকীর্ত্তন হবে।

অন্যদের মধ্যে পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তপন কান্তি দাশ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক চন্দন তালুকদার, কার্যকরী সভাপতি ডা. মনোতোষ ধর, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অলক দাশ, যুগ্ম সম্পাদক প্রকৌশলী আশুতোষ দাশ, বিপ্লব কুমার চৌধুরী, অর্থ সম্পাদক রতন আচার্য্য, সাংগঠনিক সম্পাদক আশীষ চৌধুরী, ডা. কথক দাশ, পাঠাগার ও গ্রন্থাগার সম্পাদক শিবু প্রসাদ দত্ত, উপ-প্রচার সম্পাদক এস প্রকাশ পাল, রুমকি সেনগুপ্ত, প্রকৌশলী সুভাষ গুহ, প্রকৌশলী সঞ্জিব বৈদ্য, লিপটন দেবনাথ লিপু সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।