বিদায় নিলেন নাছির

পাঁচ বছর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব পালন শেষে বিদায় নিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 August 2020, 04:05 PM
Updated : 5 August 2020, 04:05 PM

মেয়াদের শেষ দিনে বুধবার দুপুরে নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট হলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আয়োজনে প্রীতি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি।

নিজের পরিষদকে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির ঊর্ধ্বে রেখে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করেছেন বলে দাবি করেছেন নাছির।

সিসিসির পঞ্চম পরিষদের মেয়াদ পূর্তিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “নির্বাচিত পঞ্চম পরিষদকে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির ঊর্ধ্বে রেখে নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা ও আকাক্ষা পূরণে একটি অভিন্ন ও একান্নবর্তী পরিবারে পরিণত করে অর্জন ও সফলতার ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ ও পরিপূর্ণ করা সম্ভব হয়েছে।

“এই পরিষদের মেয়াদকালে সিটি করপোরেশনের ৩১ বছরের পুঞ্জীভূত সমস্যার সমাধান করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানসিক সন্তুষ্টির পরিবেশ তৈরি করেছি। এতে কাজের গতিশীলতা ও উদ্দীপনা প্রাণবন্ত রূপ পেয়েছে।”

তিনি বলেন, “ব্যক্তিক চাওয়া-পাওয়ার হিসেব বাদ দিয়ে সমাজকে কী দিলাম এবং কতটুকু সামর্থ্য উজাড় করে সামষ্টিক মঙ্গল ও কল্যাণ করতে পারি সেটাই হল ক্ষমতা ও যোগ্যতার প্রধান মাপকাঠি। 

“যারা নির্বাচিত হন তারা জনপ্রতিনিধি এবং নাগরিক সমাজেরও বিশ্বাসভাজন। তাই কোনো গোষ্ঠী বা দলীয় পরিচয় মুখ্য নয়, আসল কর্তব্য হল নাগরিকদের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা। মেয়র হিসেবে নির্বাচিত পরিষদের সদস্যরা যাতে নাগরিকদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে পারেন সেজন্য যথাসাধ্য সহযোগিতা করেছি।”

সিসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অর্গানোগ্রাম, প্রবিধান ও গ্রেডেশন তালিকা প্রণয়নের কথা জানিয়ে মেয়র বলেন, “চাকুরির ভিত্তি ছিল দুর্বল। এখন সেই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে সময়োপযোগী অর্গানোগ্রাম তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে এবং অবশ্যই তা অনুমোদিত হবে। এই গ্রেডেশন তালিকা অনুযায়ী পদায়ন, পদোন্নতি এবং দক্ষ লোকবল নিয়োগ হবে।”

গণমাধ্যমে তার মেয়াদে সিসিসির দেনা-পাওনা নিয়ে প্রকাশিত সংবাদকে একপেশে আখ্যায়িত করে নাছির বলেন, “আটশ কোটি টাকা দেনা থাকার কথা বলা হয় তা মোটেও সত্য নয়। এমন কিছু প্রকল্প থাকে যা সরকার এবং আমাদের অংশগ্রহণ থাকে। তা হলে দেনা কেন হবে? আসলে এটা ম্যাচিং ফান্ড। এ ধরনের ফান্ড অনেক ক্ষেত্রেই থাকে।

“এতে জনগণকে স্পষ্ট তথ্য না দিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হলে নগরবাসীরই ক্ষতি হবে। এটা কারও কাম্য হতে পারে না।”

তিনি বলেন, “বিগত সময়ে যারা মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের রেখে যাওয়া তিনশ কোটি টাকা দেনার মধ্যে আড়াইশ কোটি টাকা আমার মেয়াদেই পরিশোধ করা হয়েছে। এই দেনা পরিশোধ করা না হলে আরও কিছু উন্নয়ন কাজ করা সম্ভব হত।”

সিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহার সভাপতিত্বে ও কর কর্মকর্তা সাহেদা বেগমের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, সাইয়্যেদ গোলাম হায়দার মিন্টু, ইসমাইল বালী, ছালেহ আহমদ চৌধুরী ও মোহাম্মদ আজম, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের পক্ষে আঞ্জুমান আরা বেগম, সচিব আবু সাহেদ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী লেফটেন্যান্ট কর্নেল সোহেল আহমদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মুফিদুল আলম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ এ কে এম রেজাউল করিম, সিসিসি শ্রমিক ইউনিয়ন (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান প্রমুখ।