মহামারীকালে উৎসবের ক্ষণে বিনোদনের বিকল্প কেন্দ্রের খোঁজে

ঈদের মতো উৎসবের দিনগুলোতে বরাবরই ভরে থাকত চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্রগুলো। কিন্তু এবার মহামারীর কারণে সেগুলো বন্ধ থাকায় মানুষকে বেড়ানোর জন্য বিকল্প স্থান খুঁজে নিতে দেখা গেছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোউত্তম সেনগুপ্তবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 August 2020, 01:56 PM
Updated : 2 August 2020, 03:36 PM

করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে ঈদের ছুটির তৃতীয় দিন রোববার ঘর থেকে বেরিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ভিড় জমান নগরবাসী। বায়েজিদ থেকে ফৌজদারহাটে নবনির্মিত এশিয়ান হাইওয়েতে বিপুল সংখ্যক মানুষের ভিড় দেখা গেছে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারাদেশের মতো বন্দর নগরী চট্টগ্রামেও বিনোদন কেন্দ্রে জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। তাই ঈদের ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানুষ ভিড় করে পাহাড়বেষ্টিত বায়েজিদ-ফৌজদারহাট এশিয়ান হাইওয়েতে। ছবি: উত্তম সেনগুপ্ত

সরেজমিনে দেখা যায়, ছোট-বড় সব বয়েসী মানুষ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মোটরসাইকেলে, ব্যক্তিগত ও ভাড়া করা গাড়িতে করে পাহাড়ঘেরা মহাসড়কে বেড়াতে গেছেন।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে বেড়াতে আসা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বেসরকারি চাকরিজীবী আবদুর রব বলেন, “চার মাসের বেশি সময় বাসায় ছিলাম, বিরক্ত হয়ে বের হয়েছি। গত ঈদেও বের হইনি। এ ঈদে কোলাহলমুক্ত জায়গায় ঘুরতে পরিবার নিয়ে এসেছি।”

“শুধু আমরা না অনেকেই এখানে বেড়াতে আসছেন,” বলেন তিনি।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারাদেশের মতো বন্দর নগরী চট্টগ্রামেও বিনোদন কেন্দ্রে জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। তাই ঈদের ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানুষ ভিড় করে পাহাড়বেষ্টিত বায়েজিদ-ফৌজদারহাট এশিয়ান হাইওয়েতে। ছবি: উত্তম সেনগুপ্ত

শুধু বায়েজিদ-ফৌজদারহাট সড়ক নয়, প্রাকৃতিক সুষমামণ্ডিত এলাকা সিআরবি এলাকাতেও মানুষের ভিড় দেখা গেছে।
সিআরবি শিরীষতলা এলাকায় পুলিশ প্রহরায় মানুষ ভিড় করতে না দিলেও স্টেডিয়াম এলাকা থেকে সিআরবি এসপি বাংললো এলাকা পর্যন্ত মানুষের ভিড় দেখা গেছে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারাদেশের মতো বন্দর নগরী চট্টগ্রামেও বিনোদন কেন্দ্রে জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। তাই ঈদের ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানুষ ভিড় করে পাহাড়বেষ্টিত বায়েজিদ-ফৌজদারহাট এশিয়ান হাইওয়েতে। ছবি: উত্তম সেনগুপ্ত

পাশাপাশি আউটার স্টেডিয়ামও বিপুল পরিমাণ মানুষের ভিড় দেখা গেছে। স্টেডিয়াম পাড়া এলাকার অধিকাংশ খাবার দোকান বন্ধ থাকলেও কয়েকটি খোলা দেখা গেছে।

নির্দেশ অমান্য করে শিশুপার্ক খোলা

মহামারীর মধ্যে চট্টগ্রামের কাজীর দেউরি এলাকার শিশু পার্ক রোববার খুলেছিল কর্তৃপক্ষ। পরে সন্ধ্যার পর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়।

করোনাভাইরাসের কারণে চট্টগ্রাম মহানগরীতে গত ১৮ মার্চ থেকে বিনোদন কেন্দ্রে জনসমাগম নিষিদ্ধ করে পুলিশ প্রশাসন।

গত ঈদের ছুটিতেও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতেও জন ও শিশু সমাগম করতে দেয়নি পুলিশ। এই ঈদের আগে গত ২৮ জুলাই চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) পক্ষ থেকে পুনরায় নির্দেশনা দিয়ে নগরবাসীকে বিনোদন কেন্দ্রে ভিড় না করার জন্য বলে।

এর মাঝে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ রাখা হলেও কাজীর দেউড়ী শিশু পার্ক খোলা দেখা গেছে।

সিএমপির কোতয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার নোবেল চাকমা বলেন, “বিনোদন কেন্দ্র, পার্ক বন্ধ রাখার নির্দেশনা রয়েছে। তবে কীভাবে তারা খোলা রেখেছে, তা আমরা দেখছি।”

পরে পুলিশ পাঠিয়ে সন্ধ্যার দিকে পার্ক বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।

কাজীর দেউড়ি শিশু পার্ক পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ওয়ান্ডারল্যান্ড গ্রুপ।

পার্কের জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, “অনেকদিন পার্ক বন্ধ ছিল, আজ (রোববার) প্রচুর লোকজনের ভিড় হয়েছে। শিশুরা কান্নাকাটি করছিল পার্কে প্রবেশের জন্য। দর্শনার্থীরাও আমাদের বারবার অনুরোধ করেছে খোলার জন্য।

“কিছু কর্মচারীও এসেছিল সেকারণে আমরা খুলেছিলাম। প্রশাসন নিষেধ করায় আমরা পরে বন্ধ করে দিয়েছি।”