বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ‘বজ্রকণ্ঠ’ উদ্বোধন

বন্দর নগরীর বড়পোল মোড়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) নির্মিত জাতির পিতার ভাস্কর্য ‘বজ্রকণ্ঠ’ উদ্বোধন করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 July 2020, 03:51 PM
Updated : 29 July 2020, 03:51 PM

বুধবার দুপুরে সিটি মেয়র নাছির ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন।

প্রায় পাঁচ ফুট বেদির উপর সাড়ে ২২ ফুট উচ্চতার মূল ভাস্কর্যটি নির্মাণে ব্যয় হয় ৪০ লাখ টাকা। ওয়াকওয়ে, সৌন্দর্য বর্ধনসহ অন্যান্য কাজে ব্যয় হয় আরও ৪৭ লাখ টাকা।

বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নির্মিত সিমেন্টের (আরসিসি) ঢালাই এর ভাস্কর্যটির ওজন প্রায় ৩০ টন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র নাছির বলেন, এই ‘বজ্রকণ্ঠ’ ভাস্কর্যে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর চিরচেনা ভঙ্গিতে ভাষণের অভিব্যক্তিকে।

নাছির বলেন, “জাতির পিতার বজ্রকণ্ঠ কাঁপিয়ে দিয়েছিল সাম্রাজ্যবাদী পাকিস্তানী শক্তির ভীত এবং ঐক্যবদ্ধ করেছিল সমগ্র বাঙালি জাতিকে। ভাষণরত বঙ্গবন্ধুর শক্তিশালী সেই হাতটিই যেন সমগ্র বাঙালি জাতির ঐক্যের প্রতীক।

“স্বাধীন বাংলাদেশ প্রায় পঞ্চাশ বছর পার করতে চলেছে। জাতির অতীত গৌরবময় পর্বকে নতুন প্রজন্মের সামনে মূর্ত করে তুলে ধরতেই ‘বজ্রকণ্ঠ’ শিরোনামের এই ভাস্কর্য প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে, যা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে উদ্দীপ্ত করবে নিঃসন্দেহে।”

মূল ভাস্কর্যটি নির্মাণের আগে প্রায় চার মাস ধরে মাটির অনুকৃতি (মডেলিং ক্লে) জনসম্মুখে উন্মুক্ত রাখা হয়, পরে বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয় বলে জানান মেয়র।

তিনি বলেন, “আমার জানা মতে এটিই দেশে জাতির পিতার সর্বোচ্চ (বেদিসহ সাড়ে ২৬ ফুট) ভাস্কর্য।”

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ভাস্কর্যের ভিত্তির ভূগর্ভস্থ অংশ ও উপরিতলের অংশে রডের কাঠামো এমনভাবে দেয়া হয়েছে, যা স্বাভাবিক মাত্রার ভূমিকম্পেও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে জানান মেয়র।

স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে পানি, অক্সিজেন ও লবণ ঘটিত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমাতে বিশ্বসেরা প্রতিষ্ঠান থেকে রাসায়নিক-যৌগ ঢালাই মিশ্রণ সংগ্রহ করা হয়।

পাশাপাশি কিউরিং (পানিশোষণ প্রক্রিয়া) পর্ব পার করে ভাস্কর্যকে পূর্ণ শুকিয়ে নিয়ে এতে শেওলা প্রতিরোধী কেমিক্যাল (ওয়েদার কোট) স্প্রে ব্যবহার করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের (চবি) সাবেক পরিচালক শিল্পী শায়লা শারমিন এবং নাট্যব্যক্তিত্ব আহমেদ ইকবাল হায়দারের পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে এই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়।

চারুকলা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ভাস্কর মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম ভাস্কর্যের নকশা (মডেল) প্রণয়ন ও সার্বিক কাজ সম্পাদনা করেন।

সহযোগী শিল্পী হিসেবে ছিলেন জয়াশীষ আচার্য্য, তপন ঘোষ ও মোহাম্মদ পারভেজ আলম, শিক্ষার্থী বিলাস মণ্ডল, নুর-এ-আলা সিদ্দিক, গোপাল কৃষ্ণ রুদ্র, মোস্তাফিজুর রহমান তোহা, জয়দীপ দেওয়ানজী।

সহশিল্পী তপন ঘোষ ‘বজ্রকণ্ঠ’ নামটির প্রস্তাবক।