চারটি অস্থায়ী হাটের মধ্যে তিনটির ইজারা প্রক্রিয়া শেষ। দুয়েকদিনের মধ্যে বরাদ্দ পাওয়া ইজারদারদের চিঠি দেওয়া হবে। অবশিষ্ট একটি হাটের বিষয়ে মঙ্গলবার সিদ্ধান্ত হতে পারে।
এর বাইরে নগরীতে স্থায়ী দুই গরুর হাট সাগরিকা ও বিবিরহাটের ইজারাদারের সঙ্গে ‘সংক্রমণ শঙ্কামুক্ত’ হাট পরিচালনার বিষয়ে সোমবার সভা করেছেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
তবে জেলা প্রশাসন বলছে, কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরী পরামর্শক কমিটি ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে কোরবানির পশুর হাট না বসানোর সুপারিশ করার পর তারা এ বিষয়ে ঢাকার নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন।
স্থায়ী হাটগুলো বাংলা বছরের শুরুতে ইজারা দেওয়া হলে নগরীর অস্থায়ী হাটগুলো কোরবানির ঈদ উপলক্ষ করে বসে।
অন্যান্য বছর সাতটি অস্থায়ী হাট বসতো। সেগুলো হলো- এক কিলোমিটার কর্ণফুলী গরুর হাট, নিউমুরিং আবাসিক এলাকা, কমল মহাজন হাট, বাটারফ্লাই পার্ক এলাকার মাঠ, সল্টগোলা, স্টিল মিল বাজার, ও পতেঙ্গা সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ।
এরমধ্যে বিমানবন্দর সড়কে বন্দরমুখী যান চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে এবং ইপিজেডের শ্রমিক ও বিমানবন্দরগামী যাত্রীর অসুবিধার কথা বিবেচনায় শেষ তিনটি অস্থায়ী হাটের বিষয়ে আপত্তি জানায় চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ।
বিমানবন্দর সড়কে এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের কাজও চলমান।
এসব বিবেচনায় শুরুতে সাতটি পশুর হাটেরই ইজারা আহ্বান করলেও পরে এ তিনটি ইজারা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সিসিসি।
বাকি চারটির মধ্যে ৮ জুলাই তিনটি হাটের দরপত্র জমা পড়লেও এক কিলোমিটার কর্ণফুলী হাটের ইজারায় কোনো দরপত্র জমা পড়েনি।
সিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অস্থায়ী হাটগুলো এখনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। তিনটি হাটের টেন্ডার চূড়ান্ত হয়েছে। ইজারাদারদের বরাদ্দপত্র দুয়েকদিনের মধ্যে দেয়া হবে।
“অন্যটির টেন্ডার জমা না পড়ায় সময় বাড়ানো হয়। সেটা কাল দেখা হবে।”
জেলা প্রশাসনে অনুমতির আগে দরপত্র প্রক্রিয়ার বিষয়ে সিসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “লিখিতভাবে এখনও অনুমতি পাইনি। কিন্তু মৌখিকভাবে পজিটিভ সিগন্যাল পেয়েছি।”
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গরুর হাটের বিষয়ে আমরা এখনও কোনো সিদ্ধান্ত দিইনি। কারিগরি কমিটি যেহেতু একটা কথা বলেছে, তাই আমরা ঢাকার সাথে যোগাযোগ করেছি। সেখান থেকে নির্দেশনা আসার আগে আমরা কিছু বলতে পারছি না।”
তাহলে সিটি করপোরেশন কিভাবে ইজারা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছে তা জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, “সেটা তারা জানে।”
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “স্বাস্থ্যবিধি মানা, সুরক্ষা উপকরণ রাখা, বিক্রেতারা কোথায় খাবে ও থাকবে সেটা ঠিক করা এবং মেডিকেল টিম রাখা এসব বিষয়ে আমরা সিটি করপোরেশনকে বলেছি।
“তবে হাটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়ে এখনও কোনো চিঠি আসেনি।”
এদিকে সোমবার বিবির হাট ও সাগরিকা গরুর বাজার এবং পোস্তার পাড় ছাগলের স্থায়ী হাটের ইজারাদারের সঙ্গে বৈঠকে সিটি মেয়র নাছির বলেন, “এবার করোনা মহামারীর ছোবলের মধ্যেই কোরবানি আসায় তা ধর্মীয় গাম্ভীর্য ও আনুষ্ঠানিকতা রক্ষায় সীমিত ও নিয়ন্ত্রণমূলক বিধি-ব্যবস্থা মেনে পালিত হবে।
“এবার সিসিসি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে নগরীতে কোরবানীর পশুর হাটগুলো সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি পুঙ্খানুপুঙ্খু মেনে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা দূরীভূত করায়।”
তিনি বলেন, পশুর হাটগুলোতে সিটি কর্পোরেশন স্বাস্থ্য নিরাপত্তা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে যা যা করণীয় সেগুলো যথাযথভাবে পালন করবে।