চট্টগ্রামে কর্মসূচি থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি

স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার জন্য ‘ব্যর্থ’ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোটের এক কর্মসূচি থেকে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 July 2020, 05:10 PM
Updated : 9 July 2020, 05:10 PM

বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর লালদীঘি পাড়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়।

স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম-দুর্নীতি-অব্যবস্থাপনা বন্ধ ও ‘ব্যর্থ’ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ, কোভিড-১৯ টেস্টের ফি বাতিল, চট্টগ্রামে স্বাস্থ্য খাতে নৈরাজ্য বন্ধ, কোভিড-ননকোভিড সব রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার দাবিতে এই বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

বাম জোটের জেলা সমন্বয়ক ও সিপিবির জেলা সাধারণ সম্পাদক অশোক সাহা বলেন, “করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকারের চিকিৎসা ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চরম ব্যর্থতা ফুটে ওঠেছে। এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্যর্থ।

“তারা বার বার বলে আসছিল, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় তাদের প্রস্তুতি আছে, কিন্তু করোনা মোকাবেলায় চূড়ান্ত অব্যবস্থাপনায় স্পষ্ট হল, তাদের কোনো প্রস্তুতিই ছিল না। করোনা মোকাবিলায় ৪৩টির বেশি কমিটি হয়েছে, কিন্তু বেশিরভাগেরই কোনো কার্যক্রম নেই। কোনো কোনো কমিটির এখন পর্যন্ত একটি বৈঠকও হয়নি।”  

তিনি বলেন, “স্বাস্থ্যমন্ত্রী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জাতীয় কমিটির সভাপতি। কিন্তু তিনি জানেন না যে, কীভাবে গার্মেন্ট খুলে দেওয়া হয়। তিনি সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন যে, স্বাস্থ্যকর্মীরা পিপিই পরতে জানেন না। এই ব্যর্থতা তো স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে তারই। অথচ এই অথর্ব ও ব্যর্থ স্বাস্থ্যমন্ত্রী এখনও বহাল তবিয়তে দায়িত্বে আছেন।”

অশোক সাহা বলেন, “যেখানে প্রয়োজন ছিল গণহারে টেস্ট করা, আক্রান্তদের চিহ্নিত ও আলাদা করা সেখানে সরকার করোনা টেস্ট নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ফি আরোপ করেছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতার রিজেন্ট হাসপাতাল করোনা চিকিৎসার নামে ও ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে জনগণ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

“সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। স্বাস্থ্যখাতে এক চরম নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।”

সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড মৃণাল চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে কোটি মানুষের জন্য চিকিৎসা সেবা ‘খুবই অপ্রতুল’। চট্টগ্রামের মানুষ এই মহামারীর মধ্যে চিকিৎসার অভাবে এক বিভীষিকাময় সময় অতিক্রম করছে।

“চার মাস সময় পেলেও করোনা মোকাবেলায় প্রস্তুতি শোচনীয়। টেস্টের সুযোগ সীমিত, রিপোর্ট পেতে অনেক সময় লাগছে। প্রয়োজনীয় বেড, আইসিইউ, সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, জনবল, চিকিৎসা সামগ্রীর তীব্র ঘাটতি আছে। জনগণের অসহায়ত্বের সুযোগে বেসরকারি হাসপাতালগুলো গলাকাটা বিল করছে।”

মহামারীতে জনগণের চিকিৎসার দায়িত্ব রাষ্ট্রের উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ব্যক্তি উদ্যোগে এ আয়োজন সম্ভব নয়। মহামারী স্পষ্ট করল, রাষ্ট্রকে সবার জন্য স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার উপযোগী করে পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। অথচ স্বাস্থ্যখাতে সরকারের বাজেট বরাদ্দে তার কোনো প্রতিফলন নেই।”

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলন চট্টগ্রাম জেলা সমন্বয়কারী হাসান মারুফ রুমি, সিপিবি জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অমৃত বড়ুয়া, বাসদ জেলা কমিটির সদস্য মহিন উদ্দিন, বাসদ (মার্কসবাদী) জেলা সদস্য সচিব শফি উদ্দিন কবির আবিদ।

সমাবেশ পরিচালনা করেন বাসদ সংগঠক রায়হান উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা আসমা আক্তার, গণসংহতি আন্দোলনের নেতা ফরহাদ জামান জনি প্রমুখ।