মুক্তিযুদ্ধের সাব সেক্টর কমান্ডার শওকত আলী আর নেই

মুক্তিযুদ্ধে এক নম্বর সেক্টরের সাব সেক্টর কমাণ্ডার মেজর (অব) শওকত আলী (৬৮) বীর প্রতীক মারা গেছেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2020, 05:54 PM
Updated : 4 July 2020, 05:54 PM

শনিবার বিকালে চট্টগ্রাম সিএমএইচে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

শওকত আলীর ছেলে মো. ইমরান মোরশেদ আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিকাল পাঁচটা ৫৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবা মারা গেছেন। তিনি হার্ট, লিভার ও কিডনি রোগে ভুগছিলেন। গত ১০ দিন ধরে সিএমএইচে ভর্তি ছিলেন।”

শওকত আলীর এক মেয়েও রয়েছে।

রোববার দুপুরে বন্দর নগরীর গরিব উল্লাহ শাহ মাজারে জানাজা শেষে সংলগ্ন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে জানান মো. ইমরান মোরশেদ আলী।  

নগরীর নাসিরাবাদ এলাকায় মেজর (অব) শওকত আলীর পরিবার বসবাস করে। তার পৈত্রিক নিবাস নওগাঁ জেলার রাণীনগর উপজেলার কট্টেশ্বর গ্রামে।

তার বাবা রেলওয়ের চিফ ট্রাফিক ম্যানেজার এম আশরাফ আলী ও মা শিরিন আরা বেগম। শওকত আলীর জন্ম ও বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরেই।

শওকত আলীর লেখাপড়া শুরু নগরীর সেন্ট প্ল্যাসিড স্কুলে। ১৯৬৮ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। ভর্তি হন চট্টগ্রাম গভর্নমেন্ট কলেজে। ১৯৭০ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে চলে যান ঢাকায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শওকত আলী চট্টগ্রামে অষ্টম বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাথে যুক্ত হয়ে ১৯৭১ এর এপ্রিলে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন।

ফেনী নদীর নিকটবর্তী এলাকায় অপারেশনের সময় পাকিস্তানী সেনাদের শেল এসে পরে তার সামনে। একটি স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয় তার ডান পায়ের গোড়ালির নিচে। পরে গৌহাটি বেইজ হাসপাতালে অপারেশন করে তা বের করে আনা হয়।

এরপর ১৯৭১ সালের মে মাসে রিক্রুট হন সেনাবাহিনীতে। তারপর সাড়ে চার মাস ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেন।

১২ অক্টোবর সেকেন্ড ল্যাফটেনেন্ট হিসেবে যোগ দেন ১ নম্বর সেক্টরে। সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর রফিকুল ইসলাম।

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি যুদ্ধ এবং হেঁয়াকো-নাজিরহাট এলাকায় একাধিক লড়াইয়ে অংশ নেন।

শওকত আলীর মৃত্যুতে সাবেক মন্ত্রী মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, জোনাল কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মির্জা আবু মনসুর ও মুক্তিযোদ্ধা মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী শোক জানিয়েছেন।