পিসি রোডের কাজ নভেম্বরে শেষ হবে: নাছির

আড়াই বছর আগে শুরু হওয়া পোর্ট কানেকটিং (পিসি) রোডের তাসফিয়া থেকে অলংকার মোড় পর্যন্ত অংশের কাজ নভেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 July 2020, 04:56 PM
Updated : 4 July 2020, 04:56 PM

শনিবার মেয়র ওই সড়কের নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে গিয়ে এ কথা বলেন।

এর আগে গত এক সপ্তাহে কয়েক দফায় ওই সড়ক নির্মাণ কাজ দেখতে গিয়ে দ্রুত কাজ শেষ করার তাগাদা দেন মেয়র।

সবশেষ বৃহস্পতিবার ঠিকাদার ও প্রকৌশলীদের সাথে বৈঠকে নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেয়ার এ সিদ্ধান্ত হয়।

শনিবার নাছির বলেন, “সময়ের কাজ সময়ে শেষ না হলে জনগণের দুর্ভোগ বাড়ে এবং প্রকল্পের অর্থেরও অপচয় হয়। সিটি কর্পোরেশনের অনেকগুলো প্রকল্প জাইকার অর্থায়নে বাস্তবায়ন চলমান রয়েছে। তাই দাতা কর্তৃপক্ষ চায় না কাজে কোনো ধরনের খুঁত থাকুক।

“এজন্য বিরূপ আবহাওয়াজনিত কারণে কাজের মান যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য কাজ সাময়িক বন্ধ রাখা হয় এবং কারিগরি দৃষ্টিকোণ থেকে এই সময়ক্ষেপনকে অযৌক্তিক বলা যাবে না।”

তিনি বলেন, “তারপরও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে কোনো কোনো ঠিকাদার অযৌক্তিক অজুহাত খাঁড়া করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ বুঝিয়ে দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এটা পরিষ্কারভাবে চুক্তির শর্ত লংঘন।

“তবুও আমরা কাজ শেষ করার নতুন বর্ধিত সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছি। এরপরও মানসম্পন্ন ও টেকসই কাজ বুঝিয়ে দিতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্টদের শাস্তি পেতে হবে এবং নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

নগরবাসীর উদ্দেশ্যে মেয়র নাছির বলেন, “করোনাকালে বিরূপ পরিস্থিতি সীমাবদ্ধতা ও আর্থিক সংকটের মধ্যেও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কোনো কর্মপরিকল্পনাই থেমে থাকছে না। প্রকল্পগুলোর সিংহভাগ কাজের অগ্রগতি হলেও কিছুটা ফিনিশিং বাকি রয়েছে। এই প্রকল্পগুলো নভেম্বর মাসের মধ্যেই শেষ করে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা সম্ভব হবে।”

এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বর্ধিত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে জনবল বৃদ্ধি ও দিনে-রাতে কাজ করার জন্য ঠিকাদার ও প্রকৌশলীদের নির্দেশনা দেন মেয়র।

পিসি রোডের তাসফিয়া থেকে সাগরিকা মাজার পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার অংশের কাজের জন্য ৪০ কোটি টাকা এবং সাগরিকা মাজার থেকে অলংকার পর্যন্ত দশমিক ৭৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ২৮ কোটি টাকা ব্যয় করছে জাইকা।

পিসি রোড ধরে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বের হওয়া অধিকাংশ ট্রাক-কভার্ড ভ্যান ও লরি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দিকে চলাচল করে।

গত বছরের মে মাসে পিসি রোডের নিমতলা থেকে তাসফিয়া অংশের কার্পেটিং শুরু হয়। সে কাজ শেষ হয় কয়েক মাস পরে।

২০১৬ সালের শুরু থেকেই পিসি রোডের নিমতলা থেকে বড়পোল পর্যন্ত অংশের কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় আকারের গর্তের সৃষ্টি হয়।

এরপর সড়কটির নয়াবাজার পর্যন্ত বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই বছরের মাঝামাঝি থেকে সড়কটিতে যান চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।

তারপর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে জাইকার অর্থায়নেই সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে।

কয়েক দফায় সময় বাড়িয়ে প্রকল্পটির কাজ চলতি বছরের জুনে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু এরমধ্যেও কাজ শেষ হয়নি।

এদিকে বর্ষায়ও সড়ক নির্মাণের কাজ চলায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা, যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহনের চালকরা।

পাঁচ দশমিক সাত কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১২০ ফুট প্রস্থের পিসি রোডটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় একশ কোটি টাকা।

প্রকল্পের আওতায় পিসি রোডে নালা, মিডিয়ান ও এলইডি আলোকায়নের কাজও চলমান।

শনিবার পরিদর্শনের সময় মেয়রের সহকারী একান্ত সচিব রায়হান ইউসুফ, সিসিসি’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক, নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাদাত মোহাম্মদ তৈয়ব, সহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার জাহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।