আক্রান্ত বাড়লেও আতঙ্কের কারণ নেই: নাছির

করোনাভাইরাসে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও আতঙ্কের ‘কোনো কারণ নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 July 2020, 03:19 PM
Updated : 2 July 2020, 03:19 PM

বৃহস্পতিবার নগরীর পাথরঘাটায় টেলি চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র উদ্বোধনের সময় তিনি একথা বলেন।

মেয়র নাছির বলেন, “করোনাভাইরাস সংক্রমণের পিক-টাইমে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে ঠাঁই নেই অবস্থা। তাই আক্রান্তরা কাঙ্ক্ষিত সেবা না পাওয়ারই কথা। গণমাধ্যমে এ নিয়ে হাহাকার ফলাও করে প্রচার হচ্ছে কিন্তু বাস্তবতা, সক্ষমতা ও চিকিৎকদের সীমাবদ্ধতার ঘাটতিগুলো তুলে ধরা হচ্ছে না।

“মনে রাখতে হবে তড়িঘড়ি প্রশিক্ষণ দিয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তৈরি করা যায় না এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম ও করোনা বিশেষায়িত চিকিৎসা কেন্দ্র আগে থেকে ছিল না। তাই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সাময়িক অসুবিধা থাকলেও তা নিরসন হবে।”

তিনি বলেন, “প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও আতঙ্কের কারণ নেই। সংক্রমণ সাংঘাতিক ছোঁয়াচে হলেও মারাত্মক নয়। আক্রান্তদের সুস্থ হতে ১৪ দিন লাগে এবং ঘরে থেকেই চিকিৎসা নেওয়া সবচেয়ে উত্তম।

“সম্পূর্ণ অজানা-অচেনা-অদৃশ্য করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের রণকৌশল আগে থেকে নির্ধারিত থাকার কথা নয়। বাংলাদেশের তো নয়, উন্নত দেশগুলোরও ছিল না। প্রস্ততিবিহীন এই যুদ্ধ সম্পূর্ণ নিরস্ত্র অবস্থায় শূন্য থেকেই শুরু করতে হয়েছে।”

তাই ‘অযৌক্তিক সমালোচনা অর্থহীন’ দাবি করে নাছির বলেন, “সক্ষমতা ও সামর্থ্যের মাত্রা বিবেচনা এবং বাস্তবতার নিরিখে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ও সম্মিলিত অংশগ্রহণ এবং সমন্বয় ছাড়া শুধু মুখের কথা বার বার আউড়ালে ফলদায়ক হবে না।”

তবে সামনের সময়কে ‘কঠিন’ উল্লেখ করে চট্টগ্রামের মেয়র বলেন, “বিশ্বের সকল অর্থনৈতিক খাত ভঙ্গুর। বাংলাদেশে বিগত ১২ বছরে দারিদ্র্যের হার শতকরা ৭ এর নীচে নামিয়ে আনা হয়েছিল। করোনা ছোবলে মাত্র ৪ মাসে তা ৩০ শতাংশে পৌঁছেছে। এ কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেই করোনা মোকাবেলায় যুদ্ধের রণকৌশল নির্ধারণ করেছেন।”

৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইসমাইল বালীর উদ্যোগে বিনামূল্যে অক্সিজেন, জরুরি ওষুধ সরবরাহ ও টেলি চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রটি চালু করা হয়।

অনুষ্ঠানে কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইসমাইল বালী, ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গী বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, মোহাম্মদ ইকবাল, মহল্লা সর্দার আবু মোহাম্মদ জামাল, দেবব্রত দাশ দেবু, মাওলানা মোহাম্মদ ইউছুফ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) ঠিকাদার ও প্রকৌশলীদের সাথে এক সভায় নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা না হলে এবং নিম্নমানের ও ত্রুটিপূর্ণ কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হলে ঠিকাদারদের কালো তালিকাভুক্ত করে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলে হুঁশিয়ার করেন মেয়র নাছির। 

তিনি বলেন, “কাজের গতি কোনো অবস্থাতেই যাতে শ্লথ না হয় এবং জোড়াতালি দিয়ে কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার প্রবণতার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের দায়িত্বশীল থাকতে হবে। কোনো কোনো ঠিকাদার কাজের চুক্তির সময়সীমা লঙ্ঘন করে দীর্ঘসূত্রতার আশ্রয় নিচ্ছে। এর ফলে জনদুর্ভোগ বাড়ছে এবং সরকার ও সিটি কর্পোরেশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে।

“আমি বার বার সতর্ক করে দেওয়ার পরও কোন কোন ঠিকাদার এক্ষেত্রে চরম উদাসীনতা প্রদর্শন করে যাচ্ছেন এবং নানা ধরনের অযৌক্তিক অজুহাত খাড়া করছেন। যৌক্তিক কারণ থাকলে তা গ্রহণ করার মানসিকতা আমার আছে। কিন্তু অযৌক্তিক সময়ক্ষেপণ করে কাজ ঝুলিয়ে রাখা এবং নিম্নমানের কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার প্রবণতা সহ্যের সীমা হারিয়েছে।”

মেয়র নগরীর পোর্ট কানেকটিং সড়কের কাজ আগামী নভেম্বর মাসে এবং নগরীর ড্রেন, মিডআইল্যান্ডসহ বাকি সড়কগুলোর অসম্পূর্ণ কাজ জুলাই মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা দেন।

সভায় সিসিসি’র প্রধান প্রকৌশলী লেফটেন্যান্ট কর্নেল সোহেল আহমেদ, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার হোছাইন, মনিরুল হুদা, আবু ছালেহ, কামরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।