রোহিঙ্গা শিবিরে নিরাপত্তার দায়িত্ব নিচ্ছে এপিবিএন

কক্সবাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্ব যাচ্ছে আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়নের (এপিবিএন) হাতে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোউত্তম সেনগুপ্তবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2020, 05:45 PM
Updated : 24 June 2020, 03:39 AM

আগামী ১ জুলাই থেকে উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিচ্ছে পুলিশের এই বিশেষায়িত ইউনিট। এ জন্য এপিবিএন এর ১৪ ও ১৬ ইউনিটকে প্রস্তুত করা হয়েছে।

ওই ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিবন্ধিত শরণার্থী সংখ্যা ৮ লাখ ৬০ হাজার ২৪৩ জন। তার বাইরে আরও লক্ষাধিক মিয়ানমারের নাগরিক রয়েছে কক্সবাজার সদর ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায়।

এসব রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ও আশেপাশের এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে পুলিশ, সেনা বাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব সদস্যরা নিয়োজিত আছেন।

এতদিন কক্সবাজার জেলা পুলিশের অধীনে এপিবিএন সদস্যরা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে আসছিল। এখন থেকে কক্সবাজার জেলা পুলিশের থেকে আলাদাভাবে এপিবিএন সদস্যরা এ দায়িত্ব পালন করবে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তার জন্য ২০১৮ সালে এপিবিএন ১৪ নামে নতুন ইউনিট ও গত বছর ডিসেম্বর ১৬ ইউনিট চালু করা হয়।

তবে সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দুই ইউনিটে আলাদা করে সদস্যদের পদায়ন করা হয়েছে। দুজন পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তা ইউনিট দুটির অধিনায়কের দায়িত্বে আছেন। 

এপিবিএন-১৪ এর অধিনায়ক আতিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ক্যাম্পের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে এপিবিএন। আর মামলা সংক্রান্ত অন্যান্য কাজগুলো করবে জেলা পুলিশ।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এপিবিএনের দুটি ইউনিটে পুলিশ সুপারের পাশাপাশি দুজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, তিনজন করে সহকারী পুলিশ সুপার পদায়ন করা হয়েছে।

১৪ ইউনিটে ৫৮৮ ও ১৬ ইউনিটে ৬৮৮ জন সদস্য থাকবে। ইতোমধ্যে অধিকাংশ সদস্য পদায়নের পাশাপাশি অন্যান্য সুবিধাদি তাদের জন্য নিশ্চিত করা হয়েছে। ৩২টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুইটি ইউনিটের অধীনে ১০টি ফাঁড়ি থাকবে। এক জন করে পরিদর্শক ফাঁড়িগুলোর দায়িত্বে থাকবেন। 

এপিবিএন-১৬ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল রানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে এতদিন জেলা পুলিশের অধীনে এপিবিএন সদস্যরা দায়িত্ব পালন করতেন। জেলা পুলিশের সদস্যদের পর্যায়ক্রমে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ৩০ জুনের মধ্যে তারা নিজেদের ইউনিটে চলে যাবে।

“১ জুলাই থেকে কাম্পের অভ্যন্তরে এপিবিএন সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন।”

তিনি জানান, ক্যাম্প এলাকায় আগে যে পুলিশ ফাঁড়িগুলো ছিল সেগুলোতে এখন এপিবিএন সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি নতুন করে আরও কিছু স্থায়ী ফাঁড়ি নির্মাণ হচ্ছে।

এপিবিএন-১৬ এর অধীনে ১৩টি এবং এপিবিএন-১৪ এর অধীনে ২১টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প থাকবে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল রানা।

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আসা শুরু হয় ১৯৭৮ সালে। এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ে রোহিঙ্গারা আসা যাওয়ার মধ্যে থাকলেও ২০১৭ সালের অগাস্টের শেষ দিক থেকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসা শুরু করে।

২০১৭ সালের ২৪ অগাস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে একসঙ্গে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর দমন অভিযানের মধ্যে সীমান্তে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঢল শুরু হয়।

তাদের টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নে ৩৪টি নিবন্ধিত ক্যাম্পে রাখা হয়েছে। ২০১৭ সালের আগে দেশে নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছিল দুইটি। আর তার পরে নতুন করে আরও ৩২টি ক্যাম্প তৈরি করা হয়।