চট্টগ্রামে পাহাড় কেটে গড়ে তোলা স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি

বায়েজিদ লিংক রোডে অবৈধভাবে পাহাড় কেটে গড়ে তোলা স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠন পিপল’স ভয়েস।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 June 2020, 02:39 PM
Updated : 13 June 2020, 02:39 PM

শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়।

গত ৪ জুন ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিংক রোডের আরেফিন নগর, সলিমপুর সংলগ্ন কয়েকটি এলাকায় পাহাড় কেটে স্থাপনা নির্মাণ করতে দেখা যায়।

এরপর ৯ জুন পরিবেশ অধিদপ্তরের শুনানিতে লিংক রোড সংলগ্ন আরেফিন নগর এলাকায় পাহাড় কেটে সুড়ঙ্গ তৈরি ও ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়ায় মো. আবু তৈয়ব নামের একজনকে ৩২ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

পিপল’স ভয়েসের সভাপতি শরীফ চৌহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, লিংক রোডের নির্মাণ কাজ চলাকালে জালালাবাদ হাউজিংয়ের পাহাড়, বাস্তুহারা পাহাড়, কাঁঠাল বাগান পাহাড়, কৃষ্ণচূড়া পাহাড়সহ জঙ্গল সলিমপুর, সলিমপুর, উত্তর পাহাড়তলি ও জঙ্গল লতিফপুর এলাকার কমপক্ষে ১৫টি পাহাড় কেটে নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে।

“শর্ত ভঙ্গ করে পাহাড় কাটায় রাস্তা নির্মাণের তত্ত্বাবধানে থাকা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানাও করেছিল পরিবেশ অধিদপ্তর। এরপর ৬ ফেব্রুয়ারি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন ওই এলাকা পরিদর্শন করে পাহাড় কাটা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন।”

মন্ত্রীর নির্দেশের দুই মাসের মধ্যেই লকডাউনের সুযোগে ওই এলাকায় নির্বিচারে বিনা বাধায় নতুন করে পাহাড় কাটাকে ‘অশনি সংকেত’ হিসেবে বর্ণনা করেন শরীফ।

পিপল’স ভয়েসের বিবৃতিতে বলা হয়, লিংক রোডের দুই পাশে জঙ্গল সলিমপুর, সলিমপুর, জালালাবাদ, উত্তর পাহাড়তলি, আরেফিন নগর এলাকায় নতুন করে আরও ১৫টি পাহাড় কেটে চারশ স্থাপনা গড়ে উঠেছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

“আশঙ্কার বিষয় হল, সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত পাহাড়ি জমি ব্যক্তি বিশেষ দখলে নিয়ে অন্যদের কাছে বিক্রিও করে দিয়েছে। যারা এসব জমি কিনেছে তারা প্রকাশ্য দিবালোকে পাহাড় কেটে অবকাঠামো নির্মাণ করছে।”

শরীফ চৌহান বলেন, “এভাবে পাহাড় কাটা চলতে থাকলে জঙ্গল সলিমপুর, সলিমপুর, জঙ্গল লতিফপুর, জালালাবাদ ও আরেফিন নগর এলাকার বিস্তীর্ণ পাহাড় কয়েক বছরের মধ্যে বিলীন হয়ে যাবে। ওই এলাকাটি সম্পূর্ণ পাহাড়ি অঞ্চল।

“সেখানকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও জীব বৈচিত্র্য পাহাড় নির্ভর। অবাধে পাহাড় নিশ্চিহ্ন হতে থাকলে সেখানকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হবে। পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণভাবে গড়ে ওঠা নতুন বসতিতে পাহাড়ধসে প্রাণহানির শঙ্কাও বাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রকৃতি-পরিবেশ এবং মানুষের জীবন রক্ষায় অবিলম্বে সেখানকার পাহাড় থেকে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে।”

পাশাপাশি সরকারি খাস জমি দখল ও বিক্রি বন্ধ, পাহাড় দখলকারীদের আইনের আওতায় আনা এবং আর যাতে পাহাড় কাটা না হয় তা নিশ্চিত করতে সরকারে হস্তক্ষেপ কামনা করা হয় পিপল’স ভয়েসের বিবৃতিতে।

 সেখানে বলা হয়, “এগুলো করতে ব্যর্থ হলে বায়েজিদ লিংক রোড সংলগ্ন এলাকা অদূর ভবিষ্যতে চট্টগ্রামে পরিবেশ বিপর্যয় ও পাহাড় ধ্বসে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়ের আরেক ক্ষেত্রে পরিণত হবে।”

আরও পড়ুন