ঘূর্ণিঝড় আম্পান: খালি করা হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি

প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ ধেয়ে আসায় সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি থেকে সব জাহাজ সরানো হয়েছে। বন্দর থেকে কনটেইনার সরবরাহ চালু থাকলেও সব ধরনের পণ্য খালাস বন্ধ রাখা হয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 May 2020, 09:50 AM
Updated : 19 May 2020, 01:12 PM

আবহাওয়ার সবশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, পশ্চিম মধ্যবঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্নএলাকায় অবস্থানরত সুপার সাইক্লোন আম্পান আরও উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে এগিয়ে এসে মঙ্গলবার বেলা ১২টায় একই এলাকায় অবস্থান করছিল।

ওই সময় এ ঘূর্ণিঝড় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে; কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে; মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

তখন ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৯০ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছিল।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস বলছে, এ ঝড় আরও উত্তর-উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবার শেষরাত থেকে বুধবার বিকাল/সন্ধ্যার মধ্যে খুলনা ও চট্টগ্রাম উপকূলের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর বিক্ষুব্ধ থাকায় আগের মতই চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর এবং মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (প্রশাসন) জাফর আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, জেটি থেকে ১৯টি জাহাজ সরানো হয়েছে। বর্হিনোঙ্গরে থাকা ৬১টির মধ্যে ৫১টি জাহাজ গভীর সমুদ্রে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। বন্দরের চ্যানেল ক্লিয়ার করা হয়েছে।

বন্দরে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষও খোলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নম্বরগুলো হল- ০৩১ ৭২৬৯১৬, ০৩১ ২৫১৭৭১১ এবং ০১৭৫১৭১৩০৩৭।

বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বন্দরের নিজস্ব কিছু জাহাজের ইঞ্জিন চালু রাখতে বলা হয়েছে। চ্যানেলে অবস্থানরত বিভিন্ন লাইটারেজ জাহাজগুলোকে নিরাপদ স্থানে, বিশেষ করে শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন কর্ণফুলী নদীতে অবস্থানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সব ধরনের প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। জেলার সকল উপকূলীয় উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে ঝুকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে।”

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও আরেকটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপকূলীয় অঞ্চলে ৪৪৯ আশ্রয়কেন্দ্রসহ সাড়ে তিন হাজারের মতো স্কুল-কলেজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।