চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়নের ৬৯ জন ডিম সংগ্রহকারী হালদা নদীর মা মাছ রক্ষায় শপথ নিয়েছেন।
Published : 09 May 2020, 09:20 PM
শনিবার দুপুরে মদুনাঘাট এলাকায় বড়ুয়া পাড়া হ্যাচারিতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিনের উপস্থিতিতে এই শপথ করানো হয়।
এসময় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৬৯ জন ডিম সংগ্রহকারীদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ও সবজি দেওয়া হয়।
আব্দুল মজিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের ইউনিয়নে যে ডিম সংগ্রহকারী আছেন, তাদের সবাইকে খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। তারা শপথ করেছেন তারা হালদার মা মাছ রক্ষায় কাজ করবেন।”
নদীতে বিষ দিয়ে মাছ শিকার করে এরকম কাউকে ধরিয়ে দিতে পারলে বিশেষ পুরস্কারের ঘোষণাও দেন ইউএনও।
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদায় এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে ডিম ছাড়ে মা মাছ। এসময় নদী পাড়ের বাসিন্দা ডিম সংগ্রহকারীরা এসব ডিম সংগ্রহ করেন। পরে হ্যাচারি ও মাটির কুয়ায় ডিম ফুটিয়ে রেণু পোনা হয়।
হালদা নদীর হাটহাজারী অংশে ডিম আহরণকারী মোট ২৫৮ জন। তাদের মধ্যে দক্ষিণ মাদার্শা ইউনিয়নে ৬৯ জন ডিম আহরণকারীর বাস।
প্রজনন মৌসুম হওয়ায় এপ্রিল থেকে হালদায় মা মাছের আনাগোনা বেড়েছে। বেড়েছে মা মাছ শিকারীদের উৎপাতও।
সবশেষ শুক্রবার চোরা শিকাদের জালে আটকা একটি ডলফিনকে নৃশংসভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে হত্যা করা হয়।
এদিকে শনিবার হালদা নদীর হাটহাজারী সত্তার ঘাট অংশ থেকে ভাসমান অবস্থায় একটি আহত মা মাছ উদ্ধার করা হয়েছে।
হালদা নদীর মা মাছ পাহারায় নিয়োজিত বেসরকারি সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ডেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (আইডিএফ) স্বেচ্ছাসেবক রওশনগীর আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বড় একটি মা মাছ নদীতে ভাসছে শুনে ইউএনও স্যারসহ আমরা স্পিডবোট নিয়ে সত্তার ঘাট এলাকা থেকে মাছটি উদ্ধার করি।”
উদ্ধারের পর মাছটি আইডিএফ এর গড়দুয়ারা নয়াহাট এলাকায় ‘হালদা নদীতে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প’ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাটহাজারী উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল হুদা রনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ধারণা করছি নদী রক্ষা বাঁধের ব্লকে আটকে বা ধাক্কা খেয়ে মা মাছটি আহত হয়েছে।
“পিঠে এবং পেটে আঘাত আছে। মা মাছটির পেট ডিমে পূর্ণ। এটিকে অক্সিজেন ও স্যালাইন দিয়ে স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে। তবে এখনো মাছটির নড়াচড়া করতে কষ্ট হচ্ছে। মাছটি সুস্থ করতে পারলে হালদায় ছেড়ে দেয়া হবে।”