ওষুধ ছিটিয়ে মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়: নাছির

এক সপ্তাহ আগে মশা নিধনে জোর দিলেও এখন চট্টগ্রামের সিটি মেয়র আ জ ম নাছির বলছেন, শুধু ওষুধ ছিটিয়ে মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 April 2020, 10:12 AM
Updated : 9 April 2020, 10:47 AM

জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন খালের মুখ বন্ধ থাকায় জমে থাকা পানির কারণে নগরীতে মশা কমছে না বলে মনে করেন নাছির।

তার মতে, এসব খালে মশার প্রজনন ক্ষেত্র চিহ্নিত করে ধ্বংস না করা পর্যন্ত শুধু ওষুধ ছিটিয়ে মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় চাক্তাই খাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এসব কথা বলেন।

এরআগে ভিডিও কনফারেন্সে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী বন্দর নগরীর মশা মারার ব্যবস্থা করতে বললে মেয়র নাছির ১০ দিনের মধ্যে মশা সহনীয় পর্যায়ে আনা হবে বলে প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীকে যে ১০ দিনের সময় দিয়েছেন তার মধ্যে মশা নিধন সম্ভব কিনা জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার মেয়র নাছির বলেন, “গত পরশু চট্টগ্রাম বিভাগ ও সিলেট বিভাগের ভিডিও কনফারেন্সিং হয়েছিল সেখানে প্রধানমন্ত্রী মশার বিষয়টা নিয়ে জানতে চেয়েছেন। সেখানে আমি উনাকে আশ্বস্ত করেছি, উনাকে কথা দিয়েছি। ইতিমধ্যে আমরা এ বিষয়টা বিবেচনায় নিয়েছি- কিভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।

“আজকে বহদ্দারহাট থেকে দু’মাইল রাস্তা পায়ে হেঁটে চাক্তাই খালের পাড় দিয়ে, আপনারাও দেখেছেন- এখানে পুরা খাল কিন্তু ভরাট।কোনো পানি চলাচল হচ্ছে না এবং এই বিষয়টা কিন্তু আমি বার বার দেড়-দু’মাস আগে থেকে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।

চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান মেগা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), সে প্রকল্পের পূর্ত কাজ বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনী।

নাছির বলেন, “প্রকল্পের যিনি পিডি উনার সাথে সরাসরি একাধিকবার কথা বলেছি। আমাদের যিনি প্রধান প্রকৌশলী তিনিও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, উনাকেও বলেছি।

“উনারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, পানি যে স্থির হয়ে আছে, যেটা মশার একেবারে উর্বর প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করছে, সেটা বন্ধ করা হবে। উনারা আমাকে আজ থেকে ২০-২৫ দিন আগে নিশ্চিত করেছিলেন। সেটা হল যে, পাইপ বসিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করে উনারা পানিগুলো ছেড়ে দেবেন।”

মেয়র বলেন, “কিন্তু দুর্ভাগ্য করোনাভাইরাসজনিত কারণে গত ২৬ তারিখ থেকে কাজ পুরোপুরিভাবে বন্ধ। এ অবস্থা কতদিন চলবে জানি না। ফলে যে বিষয় আশ্বস্ত করেছিলেন পানিগুলো ছেড়ে দিবেন, সেটা কিন্তু হচ্ছে না। যার কারণে আমি হেঁটে হেঁটে দেখছি কি অবস্থা। তারপর উনাদের সাথে আলাপ করব। উনারা কি করতে পারেন আর আমরা কি করতে পারি। আমাদের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের সাথে বসব, জরুরি ভিত্তিতে কি করা যায় সেটা করব।

“কারণ শুধু ওষুধ ছিটিয়ে কখনও আসলে এই মশাকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না, যতদিন প্রজনন ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করে ধ্বংস করতে না পারি।আজকে সেটা দেখেছি। কালকে মহেশখালে হেঁটে হেঁটে দেখব এবং তারপর রোববার সেনাবাহিনীর সাথে বসব। এবং উনাদের সহযোগিতা চাইব। যেভাবে পারে এ ক্ষেত্রগুলো আমাদের ধ্বংস করতে হবে।”

খালের পানি চলাচল স্বাভাবিক করতে না পারলেশুধু ওষুধ ছিটিয়ে মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় জানিয়ে নাছির বলেন, “এটা আগেও বলেছি। ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রম চলমান আছে। উত্তরোত্তর এটা আরও বেগবান করব। ইকুপমেন্টের অভাব ছিল, নতুন ইকুপমেন্ট ক্রয় করেছি। মশার ওষুধ কেনার জন্য আজও কথা বলেছি।ওয়ার্ক অর্ডার দিয়েছি। যে কোনো উপায়ে ওষুধ কিনব।”

বৃহস্পতিবার মশা নিধনে ক্রাশ প্রোগামও উদ্বোধন করেন মেয়র নাছির।

এর আগে ১ এপ্রিল মশা নিধন কার্যক্রম উদ্বোধন করেছিলেন তিনি।