মৃত সন্তান ধরিয়ে দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করা হল প্রসূতিকে!

নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই সময়ে হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা না দেওয়ার নানা অভিযোগের মধ্যে এ রকম একটি ঘটনা প্রকাশ করলেন চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 April 2020, 01:18 PM
Updated : 7 April 2020, 01:19 PM

বুধবার এক ফেইসবুক পোস্টে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার এক নারীকে সন্তান প্রসবের পরদিন মৃত সন্তানসহ হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনা জানিয়েছেন তিনি।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, অসহায় ওই মায়ের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা দেন-দরবার করতে হয়েছে তাকে। পরে আবার ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করেন তারা।  

‘এমন ভয়ানক দুর্যোগেও আমরা অমানবিক কেন’- পোস্টে এই প্রশ্ন করলেও ওই হাসপাতালের নাম প্রকাশ করেননি তিনি।

ওসি কাশেম ভূঁইয়া তার ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, “জনৈকা নির্যাতিতা নারী। তার বর্ণণা অনুসারে শাশুড়ি ও ভাসুরের চরম নির্যাতনের শিকার হয়ে গত ৬ এপ্রিল রাতে চট্টগ্রাম শহরের একটি হাসপাতালে প্রতিবেশীর সহায়তায় ভর্তি হন। তিনি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্তা ছিলেন। গভীর রাতে তার অপরিণত মৃত সন্তান প্রসব হয়। ভোরবেলা ওই অপরিণত মৃত সন্তানসহ কোনো চিকিৎসাপত্র না দিয়ে চরম অমানবিক অবস্থায় ওই নারীকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়। এহেন পরিস্থিতিতে একটি অসম্পূর্ণ মৃত সন্তান নিয়ে রাস্তায় কোন যানবাহন এবং তার সঙ্গী না থাকা ওই অসুস্থ নারী কী করবেন কোথায় যাবেন কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছিলেন না।

“এরপর তিনি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে আমার সাথে কথা বললে পাঁচলাইশ মডেল থানা থেকে একটি মোবাইল টিম পাঠাই। আমি কথা বলি দায়িত্বশীল পর্যায়ে। দীর্ঘ ৫-৬ ঘণ্টা একটানা চেষ্টার পর ওই নারীকে ওই হাসপাতালে পুনরায় ভর্তি করা সম্ভব হয়। ওই ৫-৬ ঘণ্টা ওই নারী পাঁচ মাসের অপরিণত মৃত সন্তান নিয়ে ওই হাসপাতালের দ্বারে ঘুরেছিলেন।পাশে ছিল পুলিশ। আমরা তাকে সহায়তার চেষ্টা করেছি।এমন ভয়ানক দুর্যোগেও আমরা অমানবিক কেন? ”

পরে ওই নারীর সম্পর্কে জানতে চাইলে ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আনুমানিক ২২ বছর বয়সী ওই নারীর স্বামী দিনমজুর। তার শ্বশুর বাড়ি সাতকানিয়া উপজেলার ঢেমশায়।

ওই নারীর ভাষ্য মতে, বিয়ের পর গত রোববার প্রথম তার স্বামীর বাড়িতে যান। সেখানে স্বামীকে তিনি পাননি।

“কিন্তু শাশুড়ি ও ভাসুর মিলে তাকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। প্রতিবেশী একজনের সহায়তায় ওই দিন গভীর রাতে তিনি নগরীতে এসে ওই হাসপাতালে ভর্তি হন,” বলেন ওসি আবুল কাশেম।