চট্টগ্রামের সুপার শপ ‘দি বাস্কেটের’ মালিকসহ ৭৪ জন কোয়ারেন্টিনে

চট্টগ্রামের খুলশীতে ‘দি বাস্কেট’ চেইন শপের এক কর্মী নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হওয়ার সেখানকার মালিক ও ব্যবস্থাপকসহ সব কর্মীকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 April 2020, 09:43 AM
Updated : 6 April 2020, 10:49 AM

চেইন শপটির মোট ৭৪ জনের মধ্যে কয়েকজনের উপসর্গ থাকায় করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের পরীক্ষার জন্য তাদের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে বলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি জানিয়েছেন।

শুক্রবার চট্টগ্রামে প্রথম নভেল করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হন দামপাড়ার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ। তার যুবক ছেলে দি বাস্কেটের কর্মী ছিলেন বলে শনিবার তা বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। রোববার এই যুবকও আক্রান্ত বলে শনাক্ত হন।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক-ম্যানেজার থেকে শুরু করে মোট ৭৪ জন ছিলেন, তাদের প্রত্যেককে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে।”

ওই বৃদ্ধ ও তার ছেলের সংস্পর্শে আসায় মোট ৯৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে এবং ১১টি বাসভবন ও এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লকডাউন করা হয়েছে।

ওই ৭৪ জনের করোনাভাইরাস পরীক্ষার বিষয়ে কমিটি কাজ করছে বলে জানান চট্টগ্রামের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হাসান শাহরিয়ার কবির।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, তারাই নির্ধারণ করবেন কাদের পরীক্ষা করানো হবে। ইতিমধ্যে কারো কারো নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।

“প্রথম আক্রান্তের পরিবারের চারজনের করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষা করা হয়েছিল, তার মধ্যে শুধু ওই যুবকের ফল পজেটিভ।”

দামপাড়ার বাসিন্দা ৬৭ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির মেয়ে ও তার শাশুড়ি ওমরাহ করে ১২ মার্চ দেশে ফিরেন। কিন্তু শাহ আমানত বিমানবন্দরের স্ক্রিনিংয়ে তাদের মধ্যে কোনো উপসর্গ ধরা পড়েনি।

তারা ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ওই মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পর ২ এপ্রিল এলাকাবাসীর কাছে তাদের ঘোরাঘুরির অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তাদের বাড়িতে যায়। সৌদিফেরত মেয়েটি তার বাবার অসুস্থতার কথা গোপন করেন। অথচ তখন তার বাবা হাসপাতালে ছিলেন।  

ওই বৃদ্ধ প্রথমে বেসরকারি ন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন ও করোনাভাইরাসের রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু তার বিদেশ ফেরতদের সংস্পর্শে আসার তথ্য গোপন রাখা হয়। এর মধ্যে শুক্রবার ওই বৃদ্ধ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন।

সঙ্গে সঙ্গে বেসরকারি ন্যাশনাল হাসাপাতালের তিন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ মোট ১৮ জনকে এবং এক পুলিশ সদস্যকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়।

শুক্রবার রাতেই দামপাড়ায় ওই ব্যক্তির বাড়িসহ মোট ছয়টি ভবন ও সাতকানিয়ার পুরানগড়ে তার মেয়র শ্বশুরবাড়ি লকডাউন করা হয়।

পরদিন নগরীর ডবলমুরিংয়ে বৃদ্ধের ভাইদের একটি ভবন ও চন্দনাইশের দোহাজারি পৌরসভার জামিরজুরিতে তর মেয়ের শ্বশুর পক্ষের আত্মীয়দের তিনটি ভবন লকডাউন করা হয়।

শনিবার রাতে ওই বৃদ্ধের ছেলের কর্মস্থল ‘দি বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন খুলশী থানার ওসি প্রণব চৌধুরী।

এদিকে জেনারেল হাসপাতালের ১৭ জন চিকিৎসক-নার্সকে প্রথম পালায় বিশ্রামের জন্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে বলে সিভিল সার্জন জানান।

যারা এই হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করবেন তারা পাঁচদিন পালাক্রমে বিশ্রামে থাকবেন বলে আগেই নির্ধারণ করা হয়েছিল।

আরও খবর