অসুস্থতার তথ্য গোপন: চিকিৎসক-পুলিশসহ ১৯ জন কোয়ারেন্টিনে

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির বিদেশফেরত মেয়ে বাবার অসুস্থতার তথ্য গোপন করেছিলেন, যার ফলশ্রুতিতে একটি হাসপাতালের ১৮ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ যেতে হয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 April 2020, 09:56 AM
Updated : 4 April 2020, 12:18 PM

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বী মিয়া শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, কোভিড-১৯ আক্রান্ত ওই ব্যক্তি জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশনে যাওয়ার আগে বেসরকারি ন্যাশনাল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। সতর্কতার জন্য ওই হাসপাতালের ১৮ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।

তাদের মধ্যে তিনজন চিকিৎসক রয়েছেন বলে জানা গেছে।

ওই পরিবারের চারজনের নমুনা সংগ্রহ করা হলেও সৌদি আরব ফেরত ওই দুই নারীর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি বলে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন জানান।

কারণ জানতে চাইলে সেখ ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, “তারা পরীক্ষা করার ক্রাইটেরিয়ার মধ্যে এখন আর পড়েন না। কারণ তাদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ পার হয়ে গেছে।”

চকবাজার থানার ওসি নিজাম উদ্দিন জানান, ওই পরিবারে সৌদি আরবফেরত সদস্যের উপস্থিতির কথা জেনে পুলিশ তদন্তে গিয়েছিল। সেই পুলিশ কর্মকর্তাকেও হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কোভিড-১৯ আক্রান্ত ওই ব্যক্তির মেয়ে ও এক স্বজন সৌদিআরব থেকে ফিরে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ না থাকায় প্রতিবেশীরা থানায় ফোন করে অভিযোগ জানিয়েছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার থানা থেকে একজন উপ-পরিদর্শককে ওই বাসায় পাঠানো হয়েছিল।

“আক্রান্ত ব্যক্তির সৌদিফেরত মেয়ে আমাদের সাথে অসহযোগিতা করেছিল। পরিবারের সদস্যদের খোঁজ নেওয়ার সময় তার বাবা কোথায় গেছেন জানতে চাইলে তিনি বাজারে গেছেন বলে জানান তিনি।”

ওই নারী উল্টো অভিযোগ করেন, বিমানবন্দরে থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হলেও পুলিশ তাদের ‘হয়রানি’ করছে।

আক্রান্ত ব্যক্তির মেয়ের স্বামী সৌদি প্রবাসী। ওই মেয়ে ও তার শাশুড়ি ওমরা পালন শেষে গত ১২ মার্চ শাহ আমানত বিমানবন্দর দিয়ে চট্টগ্রামে আসেন। পরে মেয়েটি পুলিশকে জানিয়েছে, দেশে আসার পর তার শাশুড়ি দুই ঘণ্টা নগরীর দামপাড়ায় তার বাবার বাসায় অবস্থান করে সাতকানিয়ায় নিজের বাড়িতে চেলে যান। 

ওসি নিজাম উদ্দিন বলেন, “বৃহস্পতিবার যদি তারা সত্য ঘটনা বলতেন তাহলে আমরা একদিন আগেই ব্যবস্থা নিতে পারতাম।”

৬৭ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি নভেল করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি হন। শুক্রবার নমুনা পরীক্ষায় তার করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে।

এরপরই রাতে দামপাড়া এলাকায় ওই ব্যক্তির বাসভবনসহ মোট ছয়টি ভবন লকডডাউন করে দেয় পুলিশ। সেখানে আক্রান্ত ব্যক্তি, তার স্বজন ও প্রতিবেশীসহ ১৭টি পরিবারের বসবাস।

পরে সাতকানিয়া উপজেলার পুরাণগড়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মেয়ের শ্বশুর বাড়িটিও লকড ডাউন করা হয়েছে বলে সাতকানিয়া থানার ওসি শফিউল কবির জানান।