চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় স্বস্তি

নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়ার মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থগিত করায় নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থী।তারা এটিকে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলেও মনে করছেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2020, 04:24 PM
Updated : 21 March 2020, 04:24 PM

আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে নিবার্চন নয়, মানুষ বড়। নির্বাচন কমিশন সব বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।”

করোনাভাইরাস নিয়ে সাধারণ জনগণের মধ্যে যে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে তার কারণে এটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন রেজাউল করিম।

অপরদিকে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী শাহাদাত হোসেন নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “স্বাভাবিকভাবে জনগণের একটা দাবি ছিল। তারা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে কেন পড়বে।

“ভোট মানুসের সাংবিধানিক অধিকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসের সংক্রমণকে মহামারী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে নির্বাচন পেছানো দরকার ছিল। দেরিতে হলেও নির্বাচন কমিশনের বোধদয় হওয়ায় তাদের ধন্যবাদ জানাই।”

এখন দলমত নির্বিশেষে করোনাভাইরাস মোকাবেলা করা দরকার বলে মন্তব্য করেন পেশায় চিকিৎসক শাহাদাত।

নির্বাচন স্থগিতের পর নগরীর ৩২ নম্বর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী জহর লাল হাজারী বলেন, “এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। এখন আমাদের কাজ হচ্ছে মানুষকে সচেতন করা।

“ব্যবসায়ীদের বলব আপনারা ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়াবেন না। এলাকাবাসীকে বলব আপনারা পরিচ্ছন্ন থাকুন। সেবকদের নিয়ে এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখতে আমরা সবসময় কাজ করে যাব। আমাদের নৈতিক দায়িত্ব এখন মানুষের পাশে থাকা।”

জহর লাল হাজারী বলেন, “আমার এলাকার বাসিন্দাদের বলব অপ্রয়োজনে কোনো জনসমাগমের স্থানে যাবেন না। যেকোনো প্রয়োজনে আমাকে ফোন করুন। সাধ্যমত সহায়তার চেষ্টা করব।”

ভোট স্থগিত হওয়ায় স্বস্তিতে ভোটাররাও।

নগরীর পাথরঘাটা এলাকার বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক শম্পা চক্রবর্তী বলেন, “মানুষের জীবনের চেয়ে তো ভোট বড় হতে পারে না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে। তাছাড়া ইভিএমে ভোট মানে এটা রোগাক্রান্ত কেউ আসলে সংক্রমণের শঙ্কা থাকত। স্থগিত করায় ভালোই হয়েছে।”

হালিশহর এলাকার বাসিন্দা মো. মামুনুল ইসলাম বলেন, “নির্বাচন আরও আগেই স্থগিত করা দরকার ছিল। এই কয়দিনে প্রার্থীদের অনেকেই গণসংযোগ করেছেন। বাড়ি বাড়ি গিয়েছেন। গতকাল নির্বাচন কমিশন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণও দিয়েছেন। আগে সিদ্ধান্ত নিলে এসব হতো না।”

শনিবার ঢাকা-১০, গাইবান্ধা-৩ ও বাগেরহাট-৪ আসনে উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলার মধ্যে আগামী

২৯ মার্চ অনুষ্ঠেয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পাশাপাশি বগুড়া-১, যশোর-৬ সংসদীয় আসনে উপনির্বাচন স্থগিতের ঘোষণা দেয় নির্বাচন কমিশন।

করোনাভাইরাস সংক্রমণে সৃষ্ট কভিড-১৯ রোগ বৈশ্বিক মহামারী রূপ নেওয়ার পর বাংলাদেশেও রোগী ধরা পড়লে সব নির্বাচন স্থগিতের দাবি উঠেছিল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও বলছিল, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণের ক্ষেত্রে সংক্রমণের ঝুঁকি আছে।