চট্টগ্রামে ‘বশ মেনেছেন’ বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীরা: আ. লীগ

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচার থেকে বিরত থাকতে রাজি হয়েছেন বলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরশন (সিসিসি) নির্বাচন পরিচালনায় দলীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা দাবি করেছেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 March 2020, 03:17 PM
Updated : 19 March 2020, 03:17 PM

দল সমর্থিত ও বিদ্রোহী প্রার্থীর দ্বন্দ্বে একজন খুন হওয়ার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরীর পেনিনসুলা হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করা হয়।

এতে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সদস্য সচিব ও নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সাংসদ এম এ লতিফ ও নগর কমিটির সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে মোশাররফ বলেন, “কাউন্সিলর পদে যারা দলের মনোনয়ন পেয়েছেন, তাদের বাইরেও কিছু প্রার্থী ছিল। সে বিষয়ে আজকে বৈঠক করেছি। তারা প্রায় একমত পোষণ করেছেন।”

সিদ্ধান্ত জানিয়ে আ জ ম নাছির বলেন, “যেহেতু প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় নেই। দল ও সভানেত্রীর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে উনারা নিজেরা প্রচার-প্রচারণা থেকে বিরত থাকবেন এবং আমাদের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাবেন। আর আমাদের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণাতে উনারা সর্বশক্তি নিয়োগ করবেন।”

এক প্রশ্নের জবাবে নাছির বলেন, “বাইরে থেকে মনে করতে পারেন কেউ শক্তিশালী প্রার্থী বা তার অবস্থান আছে। কিন্তু দলের বাইরে তো কেউ নয়। এখানে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক আমাদের ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন আছেন। উনার একটা এখতিয়ার আছে। এখতিয়ারটা নির্বাচন বোর্ডই দিয়েছে। তিনি কী করবেন সেটা একান্ত উনার নিজস্ব বিষয়।

“উনি যখন যেটা ভালো মনে করবেন সেটা উনি করবেন। প্রত্যেকটা প্রার্থীকে ডেকে এনে গত কয়েকদিনে, উনাদের কথাও শুনেছি। আমাদের কথাও বলেছি। অলমোস্ট সবাই কনভিন্সড। এখনও তো কয়েকদিন হাতে আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তির বিষয়। উনারা কথা দিয়েছেন কালকে থেকে দলের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাবেন।”

দল সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘাতের বিষয়ে নাছির বলেন, “অনাকাক্ষিত হলেও ইতিমধ্যে প্রচারণা চালাতে গিয়ে কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সমস্যা হয়েছে। সংঘাত হয়েছে, মামলা-পাল্টা মামলা হয়েছে। আহত হয়েছেন এমনকি গতকাল একজন নিহতও হয়েছেন।

“এই শঙ্কা থেকেই আমাদের এই বিষয়টা। যদি শঙ্কা না থাকতো তাহলে হয়ত এটা অন্যভাবেও হতে পারত। দল ঐক্যবদ্ধ, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। উনি যেভাবে চাইছেন সেভাবে আমরা করছি।”

মোট কতজন দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন এবং তাদের মধ্যে কতজন এই সিদ্ধান্ত মেনেছেন জানতে চাইলে নেতারা কোনো উত্তর দেননি।  

নাছির বলেন, “তারা আমাদেরই সহকর্মী, এখনই কোনো হাইপোথিসিস করতে চাই না। উনাদের উপর আমাদের আস্থা আছে। আমাদের উপর উনাদের আস্থা আছে। আশা করি, যে কথাগুলো বলেছেন সেগুলো উনারা রক্ষা করবেন।

এরপর নওফেল বলেন, “তাদের উদ্দেশে আমরা বলতে চাই, তাদের সবার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার আছে। রাজনীতি একদিনের জন্য না। তারা নিশ্চয় নিজেদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাইবেন না।

“আমার যে রাজনৈতিক পরিচয় সেটাই নিয়েই তো জনগণের কাছে গিয়ে পরিচয় দিয়ে ভোট প্রার্থনা করছি। এখন দলীয় সিদ্ধান্তই যদি না মানি চাওয়ার জায়গাটা খুবই ছোট হয়ে যায়, এটা বন্ধ হয়ে যাবে যদি দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে আমরা থাকি।”

কোতোয়ালি আসনের সাংসদ নওফেল বলেন, ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি দলীয় শৃঙ্খলার প্রশ্নে কেউ কোনো ছাড় দেব না। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

“যদি কেউ মনে করি অনেক বড় নেতা, মনে রাখতে হবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়েছে বলেই সবার এত হাকডাক। দলের সিদ্ধান্ত যদি না মানি, হাকডাকও থাকবে না। অস্তিত্বও থাকবে না। উপলব্ধি নিশ্চয় আসবে।

“আশাকরি আত্মবিশ্বাস আছে সবাই দলের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে এবং নিজের প্রচারণা তা সংকুচিত করে ফেলবে। এর বাইরে যদি কেউ বলে বাইরে আছি তা জানাবেন, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা বিষয়ে জানতে চাইলে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, “যেহেতু নির্বাচন কমিশন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। আমরা ভিন্ন আঙ্গিকে প্রচারণা চালাব।”

এ বিষয়ে নওফেল বলেন, “এমনিতে নির্বাচনী বিধি নিষেধের কারণে আমরা মাস গেদারিং করিনি। এখন নির্বাচনের যে আচরণ বিধিমালা তা মেনেই প্রচারণা চালালে করোনা ভাইরাসের জন্য সর্তকর্তা অবলম্বন হবে।”