চমেকে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারি, আহত ৭

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারিতে সাতজন আহত হয়েছেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2020, 01:44 PM
Updated : 2 March 2020, 03:02 PM

সোমবার বেলা একটার দিকে কলেজের একাডেমিক ভবনের লবিতে মেয়র আ জ ম নাছরি ও প্রয়াত নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর সমর্থক ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে মারামারি বাধে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত কলেজের এক শিক্ষক জানান, ছাত্রলীগের এক পক্ষ অধ্যক্ষর সঙ্গে সাথে দেখা করে বেরিয়ে যায়। অন্য পক্ষের সিনিয়র কয়েকজন তখন স্যারের কক্ষের ভিতরে ছিল। তাদের পক্ষের জুনিয়ররা ছিল বাইরে।

“এসময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হলে অধ্যক্ষ স্যারসহ ছুটে গিয়ে পুলিশের সহায়তায় তাদের নিবৃত্ত করি।”

চট্টগ্রাম মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ‍পরিদর্শক জহিরুল হক ভূঁইয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির খবর পেয়ে আমরা ‍ছুটে যাই। পরে থানা থেকে ওসিসহ অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।”

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগে দীর্ঘদিন ধরে বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সমর্থক আধিপত্য রয়েছে।

ঘটনার পর ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের মহিউদ্দিন চৌধুরী পক্ষের সমর্থক অভিজিৎ দাশ বলেন, “ছাত্রাবাসের ই ও ডব্লিউ ব্লকের পরিত্যক্ত কক্ষগুলো সংস্কার, হলে সাধারণ ছাত্রদের শারীরিক-মানসিক হেনস্তা থেকে রক্ষা করাসহ কিছু দাবি নিয়ে কয়েকদিন আগে শিক্ষার্থীদের পক্ষে প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে লিখিত আবেদন করেছিলাম।

“সেই আবেদনের বিষয়ে আজ আলাপ করতে ডেকেছিলেন স্যার। স্যারের সাথে দেখা করে বের হওয়ার সময় সিঁড়িতে আমাদের গতিরোধ করা হয়। কেন তাদের না বলে আগে স্যারকে জানিয়েছি একথা বলেই আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়।”

হামলায় তার হাত ভাঙাসহ চারজন আহত হয়েছেন বলে দাবি অভিজিতের।

এই পক্ষে আহত অন্যরা হলেন- শামীম আহমদ, মুশফিকুল ইসলাম আরাফ, ফাহাদুল ইসলাম। এদের মধ্যে শামীম ও মুশফিকুল মাথায় আঘাত পেয়েছেন।

পাল্টা অভিযোগ করে নাছির পক্ষের সমর্থক কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন ইসলাম শিমুল বলেন, “অনিয়মিত কিছু ছাত্র বরাদ্দ ছাড়াই ইদানিং ছাত্রাবাসে থাকছে। এ নিয়ে আমরা কয়েকদিন আগে প্রিন্সিপাল স্যারকে অভিযোগ দিয়েছি।

“আজ আমরা স্যারের ডাকে উনার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম। এসময় বাইরে থাকা আমাদের জুনিয়রদের ওপর হামলা চালানো হয়।”

এতে শাহীন, অর্নিবান ও শাহরিয়ার নামের তিনজন আহত হয়েছেন বলে জানান শিমুল। এদের মধ্যে শাহরিয়ার মাথায় আঘাত পেয়েছেন।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মো. শামীম হাসান বলেন, “দুপুরে ছাত্ররা সবাই নিজ নিজ বক্তব্য জানাতে আমার কক্ষে এসেছিল। তাদের আশ্বস্ত করেছি, বলেছি সহাবস্থান করতে।

“তারপর তারা কলহে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পর জরুরি ভিত্তিতে একাডেমিক কাউন্সিলের সভা করেছি। সাত সদস্যের তদন্ত দল করা হয়েছে। এছাড়া আহতদের চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে।”

অধ্যক্ষ শামীম বলেন, ছাত্রাবাসগুলোতে শিক্ষকরা গেছেন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছেন। রাতে আবার শিক্ষকরা হলগুলোতে যাবেন, যাতে শিক্ষার্থীরা অভয় পেতে পারে।