সংবর্ধিত শাহাদাত চাইলেন ইসির নিরপেক্ষ ভূমিকা

চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে সংবর্ধনা নিয়ে ইসির নিরপেক্ষ ভূমিকা প্রত্যাশা করেছেন শাহাদাত হোসেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Feb 2020, 03:47 PM
Updated : 26 Feb 2020, 03:47 PM

আগামী ২৯ মার্চ অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থিতা নিশ্চিত করে শাহাদাত বুধবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ফিরলে তাকে এই সংবর্ধনা দেয় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি।

নগরীর পুরাতন রেল স্টেশন চত্বরে এ সমাবেশের আয়োজনের উদ্যোগ নিলেও অনুমতি না পাওয়ায় নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্যে নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত ভোটের দিন কেন্দ্র পাহারা দিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ ভূমিকা প্রত্যাশা করেন তিনি।

শাহাদাত বলেন, “ঢাকার দুই সিটি এবং চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে আপনারা দেখেছেন জনগণ ভোটবিমুখ হয়ে গেছে। জনগণকে ভোটকেন্দ্রমুখী করার জন্য ইসির নিরপেক্ষা ভূমিকা পালন করতে হবে।

“নৌকা প্রতীক মানে যেখানে ইচ্ছা সেখানে সমাবশে, ভোট ডাকাতি, পাশাপাশি সেন্টার দখল করে জয়লাভ করার অপচেষ্টা, নীল নকশার যে নির্বাচন… এ ধরনের চিন্তাভাবনা থেকে সরকার ও ইসিকে বের হয়ে আসতে হবে। অন্যথায় জনগণ ভোট সেন্টারমুখী হবে না।”

আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থীকে চট্টগ্রামের পুরাতন রেল স্টেশনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান করার জন্য অনুমতি দেওয়া হলেও তার ক্ষেত্রে তা করতে না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শাহাদাত। 

ভোটে অংশ নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন তিনি বলেন, “জাতীয়তাবাদী দলের এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ শুধু গণতন্ত্রের শেষ মাধ্যম- জনগণের ভোটের অধিকারকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে জোরদার করতে এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি।”

মেয়র হতে পারলে চট্টগ্রামকে ঢেলে সাজিয়ে জলবদ্ধতামুক্ত পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকর ও পর্যটনমুখী নগরীতে পরিণত করার জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।

“মেয়র হতে পারলে সবাইকে নিয়ে এমন জনবান্ধব শহর গড়ে তুলব-  যেখানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা থাকবে, সাম্যের কথা থাকবে।” 

নগর বিএনপির সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দলটির নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর।

বক্কর বলেন, “আওয়ামী লীগ যেহেতু পুরাতন রেলস্টেশন চত্বরে সমাবেশ করেছিল তাই আমরাও সেখানে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছিলাম। প্রথমে মৌখিকভাবে আশ্বাস দিলেও গতকাল (মঙ্গলবার) রাত ১১টায় আমাকে টেলিফোনে জানানো হয় সেখানে সমাবেশ করা যাবে না।”

পুলিশের পক্ষ থেকে সমাবেশের বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “আমি অনেকের সাথে কথা বলেছি। রিটার্নিং কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করেছি। তিনি আমাকে বলেছেন পুলিশকে ম্যানেজ করে সমাবেশ করতে।”

ভোটের দিন দলীয় নেতাকর্মীদের কেন্দ্রে অবস্থান নেয়ার আহবান জানিয়ে বক্কর আরও বলেন, “অতীতের নির্বাচনে লক্ষ্য করেছি যেখানে বিএনপি প্রার্থী শক্তভাবে দাঁড়াতে পেরেছে সেখানে বিএনপি জিতেছে। আমাদেরও সেরকম প্রস্তুতি রাখতে হবে। ভোটে যে কোনো বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।” 

শাহাদাতের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে খোলা স্থানে ট্রাকে করে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়। দুপুর থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে বৃষ্টির ভেতর দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকে বিএনপি নেতাকর্মীরা। 

দুপুরে ট্রেনে করে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে নেমেই শাহাদাত চলে যান আমানত শাহর মাজার জিয়ারত করতে। বেলা চারটার দিকে দলীয় নেতাকর্মী বেষ্টিত হয়ে শাহাদাত আসেন দলীয় কার্যালয়ে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাবেক বন ও পরিবেশ মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম, সাবেক সাংসদ রোজি কবীর, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মীর হেলালসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।