শুক্রবার বিকেলে নগরীর লালদীঘি মাঠে দেশরক্ষা অভিযাত্রার অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রশ্ন করেন।
‘দুঃশাসন হঠাও, ব্যবস্থা বদলাও, বিকল্প গড়ো’ এই স্লোগান নিয়ে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সভার প্রধান অতিথি সিপিবি সভাপতি বলেন, “চার মূলনীতিকে সামনে রেখে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খোন্দকার মোশতাক ভিন্ন ধারায় চলতে শুরু করে। সেই পথ ধরে জিয়া এরশাদ খালেদা জিয়াও চলেছে। সেই পথ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধী পথ।
“এরপর তিনবার শেখ হাসিনার সরকার ছিল। আজ জিজ্ঞেস করতে চাই, বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর চার নীতিতে চলছে নাকি মোশতাক জিয়া এরশাদ খালেদার মুক্ত বাজার, লুটপাট, দুর্নীতি, সাম্প্রদায়িকতার নীতিতে চলছে?”
সেলিম বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বললেন মদিনা সনদে দেশ চলবে। সংবিধান অনুযায়ী দেশ চলবে নাকি মদিনা সনদ অনুযায়ী চলবে? তাহলে সংবিধান পরিবর্তন করে সেখানে মদিনা সনদ লিখে দেন।
“এখন প্রতিযোগিতা চলেছে খালেদা বেশি নাকি হাসিনা বেশি ‘ইসলামপছন্দ’। এই প্রতিযোগিতা দিয়ে দেশ এগোবে না। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পথে ফিরতে হবে।”
আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ বুর্জোয়া দলের হাতে মুক্তিযুদ্ধের অর্জন নিরাপদ নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ দাবি করে তারা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া দল। কিন্তু এখন তারা বিশ্বাসঘাতকায় নেতৃত্ব দেওয়া দলে পরিণত হয়েছে।”
সিপিবি সভাপতি বলেন, দুর্নীতি অনাচারে দেশ ছেয়ে ফেলেছে। পুকুর কাটা শিখতে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বিদেশে চলে যায়।
“বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন বাংলাদেশের সম্পদ বিদেশে পাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ন্যায়সঙ্গত। যদি একাত্তরে অস্ত্র হাতে সংগ্রাম ন্যায়সঙ্গত হয়, তাহলে একইভাবে লুটপাটতন্ত্রের বিরুদ্ধে নতুন সংগ্রাম রচনা আমাদের কর্তব্য। “
তিনি বলেন, একটা ধর্ষণের বিচার হয় ৯৯টার হয় না।
সিপিবি সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম বলেন, সিপিবি উন্নয়নবিরোধী নয়। কিন্তু কার উন্নয়ন হচ্ছে? এক শতাংশ মানুষের উন্নয়ন নাকি ৯৯ শতাংশ মানুষের উন্নয়ন?
“বৈষম্য-শোষণ-লুটপাটের উন্নয়ন চলছে। সে উন্নয়নে আমরা পদাঘাত করি। উন্নয়নের নামে প্রকল্প ব্যয় ৫-১০ গুণ বাড়ে। আর শতকরা ৪০ টাকার কাজও হয় না। বৈষম্যহীন দুর্নীতিমুক্ত উন্নয়ন চাই।”
সিপিবি চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বয়ক মৃণাল চৌধুরীর সভাপতিত্বে জনসভার সঞ্চালনা করেন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অশোক সাহা।
বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ আল কাফী রতন ও লীলা চক্রবর্তীসহ বিভিন্ন জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ। সভা শেষে একটি মিছিল নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।