চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালের ৪৭ বছর উদযাপন

প্রতিষ্ঠার ৪৭ বছর পূর্তি উদযাপন করেছে চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (সিইআইটিসি) এবং বাংলাদেশ জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতির (বিএনএসবি)।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Feb 2020, 03:50 PM
Updated : 10 Feb 2020, 03:50 PM

নগরীর পাহাড়তলিতে চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল প্রাঙ্গনে রোববার রাতে এই আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা  ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন,  “চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল ও নবনির্মিত অত্যাধুনিক ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল চট্টগ্রাম তথা দেশের জন্য অনেক বড় অর্জন। 

“চক্ষু হাসপাতালের ট্রাস্টি ও অন্ধকল্যাণ সমিতির অনেক অর্জন সম্পর্কে বিদেশের মানুষ জানলেও এদেশের মানুষ হয়তো অবগত নয়। চক্ষু হাসপাতাল ও অন্ধকল্যাণ সমিতি প্রতিষ্ঠার সাথে যারা জড়িত ছিলেন তাদের সবাইকে আমি অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”

সিইআইটিসির ম্যানেজিং ট্রাস্টি অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ইতিহাস তুলে ধরে বলেন,  “১৯৭২ সালে এক বিকেলে অন্ধ ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের সহায়তার জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গঠনের ধারণা থেকে আমাদের শুরু।

“মাত্র তিন হাজার ছয়শ টাকা দিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হয়। যখন আমরা একটি অব্যবহৃত সরকারি জমি পেলাম তখন এ ধারণাটি বাস্তবায়িত হতে খুব বেশি সময় লাগেনি।”

তিনি বলেন, “আমাদের ৪৭ বছরের দীর্ঘ যাত্রার সময়ে আমরা প্রচুর বন্ধু, আজীবন সদস্য, আন্তর্জাতিক বন্ধু এবং দাতাদেরও হারিয়েছি, আমি শ্রদ্ধার সাথে তাদের অবদানগুলি স্বীকার করি। এবং অবদানকারীদের হারিয়েছি।

“বর্তমানে চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতাল বছরে ৩ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। হতদরিদ্র রোগীদের জন্য প্রতিবছর প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। অস্ত্রোপচার হচ্ছে বছরে ২০ হাজারেরও বেশি রোগীর।”

‘রোগীদের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেওয়ার’ লক্ষ্য জানিয়ে অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন বলেন, “বর্তমানে চক্ষু হাসপাতালের পাশে ট্রাস্টের মাধ্যমে ৭০০ কোটি টাকার অত্যাধুনিক ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছি।

“আমাকে একদিন পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হবে, কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠান রয়ে যাবে। সেবা দিয়ে যাবে। এটাই আমার পাওয়া।”

ট্রাস্টির চেয়ারম্যান ও দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, ”এটি একটি ট্রাস্ট। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সেবা। যাদের হাত ধরে এই ট্রাস্টের যাত্রা শুরু হয়েছিল এবং প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই প্রতিষ্ঠানকে পর্যায়ক্রমে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের সবার প্রতি আমার আন্ততরিক কৃতজ্ঞতা রইল।”

অনুষ্ঠানে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশি-বিদেশি আট জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।

সম্মাননা পেয়েছেন- জার্মানির রোজি গোলম্যান, সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফ্রাঙ্ক বিলসন, শ্রীলঙ্কার ডা. আর পারারাজা সেগ্রাম, ভারতের তুলসীরাজ রাভিল্লা, বাংলাদেশের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) ডা. এম এ মালেক, সাবেক মন্ত্রী ডা. এম এ মতিন (মরণোত্তর) এবং সাবেক মন্ত্রী জহুর আহমদ চৌধুরী (মরণোত্তর)।

আর প্রতিষ্ঠান হিসেবে সম্মাননা পেয়েছে অরবিস ইন্টারন্যাশনাল।

সম্মাননা প্রাপ্তদের হাতে গোল্ড মেডেল ও সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন জামিলুর রেজা চৌধুরী। 

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার, সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ীমী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী, লায়ন গভর্নর কামরুন মালেক, প্রাক্তন লায়ন গভর্নর রূপম কিশোর বড়ুয়া, প্রাক্তন রোটারি গভর্নর অধ্যাপক তৈয়ব চৌধুরী ও অধ্যাপক ডা. তাহমিনা বানু প্রমুখ।