‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ সরোয়ারকে ৭ দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ

মধ্যপ্রাচ্যে বসে চট্টগ্রামে চাঁদাবাজি চালিয়ে আসা ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ সরোয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Feb 2020, 02:42 PM
Updated : 9 Feb 2020, 02:42 PM

বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি প্রিটন সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সরোয়ারের বাসা থেকে অস্ত্র উদ্ধারের মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোববার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে এই রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত রিমান্ড শুনানির জন্য সোমবার দিন রেখে সরোয়ারকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।

নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (বায়েজিদ বোস্তামি জোন) পরিত্রাণ তালুকদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, প্রায় তিন বছর কাতারে পালিয়ে ছিলেন সরোয়ার। কাতারে মারামারির ঘটনায় সে দেশের পুলিশ তাকে আটক করে এক মাসের সাজা দেয়।

সাজা শেষে সরোয়ারকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হলে শনিবার ঢাকা বিমানবন্দরে তাকে আটক করা হয়। খবর পেয়ে বায়েজিদ বোস্তামি থানা পুলিশের একটি দল ঢাকায় গিয়ে সরোয়ারের পরিচয় নিশ্চিত হয়। রোববার ভোরে তাকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়।

সরোয়ারকে চট্টগ্রামে এনে বায়েজিদ থানার খন্দকীয়া পাড়ায় তার বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে ৩০ রাউন্ডগুলিসহ একটি একে-২২ রাইফেল এবং চার রাউন্ড গুলিসহ একটি এলজি উদ্ধার করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে এই মামলা করা হয় বলে ওসি প্রিটন সরকার জানান।

চট্টগ্রামে বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রমে প্রায় দেড় দশক আগে আলোচনায় আসে সরোয়ার ও তার বন্ধু ম্যাক্সনের নাম। সে সময় তারা পরিচিত ছিলেন শিবির ‘ক্যাডার’ সাজ্জাদ হোসেন খানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে, যিনি চট্টগ্রামের আট খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে বর্তমানে ভারতের কারাগারে বন্দি।

২০১১ সালের জুলাই মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিঙ্গারবিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন ম্যাক্সন। তার দেওয়া তথ্যে চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকা থেকে সরোয়ারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

স্থানীয়রা বলছেন, প্রায় ছয় বছর কারাগারে থাকার সময়ও সরোয়ার ও ম্যাক্সন তাদের অনুসারীদের দিয়ে বায়েজিদ এলাকায় চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাদের হয়ে ‘মাঠের তদারকি’ করতেন ইমতিয়াজ সুলতান ওরফে একরাম।

এই একরামের পুরো নাম ইমতিয়াজ সুলতান একরাম। তিনি চট্টগ্রামে স্কুলছাত্রী তাসফিয়া হত্যা মামলার পলাতক আসামি। এলাকায় তিনি পরিচয় দিতেন যুবলীগ নেতা হিসেবে।

পরিদর্শক প্রিটন সরকার জানান, ২০১৭ সালে কারাগার থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে কাতারে চলে গিয়েছিলেন সরোয়ার ও ম্যাক্সন। আর তাসফিয়া হত্যা মামলায় আসামি হওয়ার পর একরামও কাতারে পাড়ি জমান।

গতবছর চট্টগ্রামে দুই ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, সরোয়ার ও ম্যাক্সন মধ্যপ্রাচ্যে বসেই সহযোগীদের মাধ্যমে দেশে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন।