বৃহস্পতিবার ঢাকা ট্রাংক রোড থেকে বায়েজিদ বোস্তামী পর্যন্ত লিংক রোড পরিদর্শন করে তিনি বলেছেন, প্রকল্পে নকশা মানা হয়নি।
মন্ত্রী এর আগে লালখান বাজারের মতিঝর্ণা এলাকা এবং লিংক রোড এলাকায় কেটে ফেলা পাহাড়ের অবস্থা দেখেন।
এ সময় এক প্রশ্নে মন্ত্রী মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন বলেন, “যেভাবে আমাদের দেশে পাহাড় কাটা হচ্ছে, এটা যেভাবেই হোক বন্ধ করতে হবে। সেজন্য জনসচেতনতা দরকার। এই জনসচেতনতা আপনাদের মাধ্যমেই আমরা চাই। সাংবাদিক ভাইরা এটা তুলে ধরবেন- পাহাড় কাটলে কি পরিমাণ ক্ষতি হয় সেটা আপনারা তুলে ধরবেন।”
তিনি বলেন, “আজকে আমরা চট্টগ্রাম আসেছি পাহাড় কাটার অভিযোগ শুনে। এটা আমরা সচক্ষে দেখে বিকালে মিটিং এ বসব এবং তারপর সিদ্ধান্ত নেব।”
লিংক রোড নির্মাণে পাহাড় কাটা এবং ডিজাইন না মানার অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, “এখানে ডিজাইন মানা হয়নি। এখন পর্যন্ত যতটুকু দেখলাম এখানে ডিজাইন মানা হয়নি। এখন কী করণীয়, আমরা বসব, বসে সিদ্ধান্ত নিব।”
এই রাস্তা নির্মাণে অনুমোদনের চেয়ে বেশি পাহাড় কাটায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে গত মাসে ১০ কোটি টাকার বেশি জরিমানা করে পরিবেশ অধিদপ্তর।
“স্লোপ যেটা রাখার কথা সেটা রাখা হয়নি। স্লোপ রাখা প্রয়োজন বলেই সেটা ডিজাইনে দেয়া হয়েছে। সেই স্লোপ রেখেই রাস্তা করতে হবে।”
ঢাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে শুনানি শেষে গত ২৯ জানুয়ারি সিডিএকে ১০ কোটি ৩৮ লাখ ২৯ হাজার ৫৫৩ টাকা জরিমানা করেন মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট বিভাগের পরিচালক রুবিনা ফেরদৌসী।
পাহাড় কেটে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস, পাহাড়ের উপরিভাগের মাটি এবং ভূমির বাইন্ডি ক্যাপাসিটি নষ্টসহ পরিবেশ-প্রতিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করায় এই জরিমানা করা হয় বলে অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
ঢাকা ট্রাংক রোড থেকে বায়েজিদ বোস্তামী পর্যন্ত একটি লিংক রোড করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। প্রকল্পটি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এজন্য পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদনও নেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু গত ২৫ জানুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এ কে এম রফিকুল ইসলাম প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে অনুমোদনের বাইরে পাহাড় কাটার প্রমাণ পান।
অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, প্রকল্প প্রস্তাবনায় যত ঘনফুট পাহাড় কাটার অনুমোদন তারা নিয়েছিল বাস্তবে তার থেকে ৬৯ হাজার ২১৯ দশমিক ৭০২ বর্গফুট বেশি কেটেছে। যে এঙ্গেলে কাটার কথা ছিল সেভাবে না কেটে ৯০ ডিগ্রি এঙ্গেলে খাড়াভাবে কেটেছে। ফলে যেকোনো মুহূর্তে পাহাড় ধসে মানুষের জীবনহানি ঘটতে পারে।
পাহাড় কাটার অভিযোগে এর আগেও ২০১৭ সালে একবার চউককে সতর্ক করে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ধার্য করেছিল পরিবেশ অধিদপ্তর।