মিয়ানমারকে আইসিজের রায় মানতেই হবে: হাছান

ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে) রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় মিয়ানমারকে জরুরি ভিত্তিতে যেসব অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তা প্রত্যাখ্যানের সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Jan 2020, 01:27 PM
Updated : 25 Jan 2020, 01:27 PM

শনিবার দুপুরে রাঙ্গুনিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা’ কর্মসূচির আওতায় নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ ও অসুস্থদের অনুদানের চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, “মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক আদালতের রায় অবশ্যই মানতে হবে। তাদের এই রায় প্রত্যাখ্যান করার কোনো সুযোগ নেই। এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। সেখানে যতজন বিচারক ছিলেন তারা সর্বসম্মতভাবে এই রায় দিয়েছেন।

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনে গাম্বিয়ার করা এক আবেদনের প্রেক্ষিতে আইসিজের ১৭ সদস্যের বিচারক প্যানেল গত বৃহস্পতিবার দেশটিকে জরুরি ভিত্তিতে চার দফা অন্তর্বর্তীকালীন পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেয়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “যেসমস্ত দেশ এই রায়ের আগে মিয়ানমার যে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করেছে এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নির্মূল করেছে সেই ব্যাপারে এতদিন দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিল, আমি মনে করি এই রায়ের পর তারা মিয়ানমারকে চাপ প্রয়োগ করবে।

“এতদিন যারা মিয়ানমারকে এই কাজ থেকে নিবৃত্ত করার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত চাপ প্রয়োগ করেনি, তারা রোহিঙ্গাদের যাতে পূর্ণাঙ্গ নাগরিক অধিকার দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ফেরত নিয়ে যায় সেজন্য এই রায়ের পর মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগ করবে। মিয়ানমারকে এই রায় অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”

তিনি বলেন, “মিয়ানমারে যখন সেখানকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর নিপীড়ন-নির্যাতন চালিয়েছে, যখন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে, রোহিঙ্গাদের যখন নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছিল, তখন বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন- আমি যদি দেশের ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারি, তাহলে মায়ানমারের ১০-১১ লাখ মানুষকে খাওয়াতে পারব। সেকারণে তিনি আমাদের সীমান্ত খুলে দিয়েছেন এবং তাদেরকে বাংলাদেশে জায়গা করে দিয়েছেন।

“কিন্তু মিয়ানমার যেভাবে সেখানে মানুষ হত্যা করেছে, ছোট শিশুদের হত্যা করেছে, সন্তানের সামনে মাকে ধর্ষণ করেছে, নির্বিচারে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে, সেটা মানবতাবিরোধী অপরাধ। সেই অপরাধের বিরুদ্ধে ওআইসির সকল সদস্য রাষ্ট্রের পক্ষে গাম্বিয়া আন্তর্জাতিক আদালতে  মামলা করেছে। সেই মামলায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে একটি ঐতিহাসিক রায় হয়েছে।”

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে ইউএনও মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান চৌধুরী, পৌর মেয়র শাহজাহান সিকদার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম তালুকদার।

বিভিন্ন শ্রেণির ২০৬ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষা বৃত্তির নগদ টাকা, দুইশ শিক্ষার্থীকে শিক্ষা উপকরণ, দুটি সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ক্রীড়া সংগঠনকে বিভিন্ন সামগ্রী এবং ৩০ জনকে বাইসাইকেল দেয়া হয় অনুষ্ঠানে। পাশাপাশি বিভিন্ন অসুস্থ ২১ জনকে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়।