নতুন প্রজন্মকে বিপথগামী করার চেষ্টায় পরাজিত শক্তি: নাছির

একাত্তরের পরাজিত শক্তির দোসররা বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মকে বিপথগামী করার চক্রান্ত অব্যাহত রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2019, 09:48 AM
Updated : 14 Dec 2019, 09:48 AM

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শনিবার চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পর তিনি একথা বলেন।

নাছির বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের উষালগ্নে পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাঙালিকে মেধা শূন্য করতে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের নীল নকশায় রাজাকার-আলবদর-আলশামস বুদ্ধিজীবীদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।

“এই নীল নকশার প্রধান পরিকল্পনাকারীদের বিচারিক কার্যক্রমের মাধ্যমে আদালতের রায়ে ফাঁসির দড়িয়ে ঝুলিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে দায়মুক্ত করেন। তবে বাঙালিকে মেধা শূন্য করার জন্য এখানো চক্রান্ত হচ্ছে। নতুন প্রজন্মকে বিপথগামী করার অপচেষ্টা করছে একাত্তরে পরাজিত শক্তির দোসর।”

এর বিরুদ্ধে নতুন প্রজন্মকে সচেতন করে ভবিষ্যতকে নিরাপদ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বলেন, “স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসররা কতজন বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করেছিল তার সঠিক পরিসংখ্যান তৈরি হয়নি। তবে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রাথমিকভাবে এক হাজারেও বেশি। এর মধ্যে আছেন শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, ডাক্তার, চিকিৎসক এবং প্রকৌশলীরা। এরা আমাদের শ্রেষ্ঠ মানুষ।

“আমি সরকারের কাছে, আহ্বান জানাই বুদ্ধিজীবী হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত এখনো অনেকে বিদেশে পলাতক রয়েছে। তাদেরকে ফিরিয়ে এনে আদালতের রায়ে প্রদত্ত সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করা হোক।”

নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা করেছিল বাংলাদেশের জাতিসত্তার অস্তিত্বকে বিপন্ন করতে। বাঙালি জাতি সশস্ত্র যুদ্ধে যখন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে তখনই ইতিহাসের এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড সংঘঠিত হয়।

“ঘাতকরা ভেবেছিল তারা তাদের অপকর্মে সফল হবেন। কিন্তু ইতিহাসের অমোঘ অপরিহার্য পরিণতি অনুযায়ী তাদের সেই ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। আমাদের নতুন প্রজন্মকে বুঝাতে হবে- কোন উদ্দেশ্যে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল। কারণ নতুন প্রজন্মকে পরিকল্পিতভাবে একাত্তরের পরাজিত শক্তি ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে বিপথগামী করতে চেয়েছিল।

চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, উপদেষ্টা শেখ মাহমুদ ইসহাক, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম ফারুক, ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর ও মশিউর রহমান চৌধুরী এসময় সেখানে ছিলেন।

এদিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে নগরীর চশমা হিলে প্রয়াত নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসভবনে অলোচনা সভা এবং দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করেছে নগর মহিলা আওয়ামী লীগ।

আলোচনা সভায় নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিন বলেন, বিজয়ের ঊষালগ্নে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে ইতিহাসের একটি কলংকিত অধ্যায় রচনা করেছে পাকবাহিনীর দোসররা। পৃথিবীতে এরকম কোনো মানবতাবিরোধী ঘটনার নজির নেই।

“তাই যারা এই অপকর্ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের ঘৃণা ও দহন কখনো শেষ হবে না। আমাদের সন্তানদের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানিয়ে তাদের মধ্যেও ঘাতকের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করতে হবে। এই ঘৃণার মধ্যদিয়ে নতুন প্রজন্ম পরিশুদ্ধ হবে।”

মহিলা লীগের যুগ্ম সম্পাদক নীলু নাগের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি মমতাজ খান, যুগ্ম সম্পাদক মালেকা চৌধুরী,  হাসিনা আকতার টুনু, হুরে আরা বিউটি, লায়লা আক্তার এটলী, শারমিন ফারুক, আয়েশা আলম, ফাতেমা আকতার, ঝর্ণা বড়ুয়া, আয়েশা আক্তার পান্না, ইশরাত জাহান ও মনোয়ারা বাহাদুর।

সকালে নগরীর পাহাড়তলি এলাকায় ‘জল্লাদখানা’ বধ্যভূমিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সিটি মেয়র আ জ ম নাছির।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি চট্টগ্রামের সব বধ্যভূমি চিহ্নিত করে সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।