শিশুটির নাম রাখা হয়েছে মোহাম্মদ ফাইয়াজ-উর-রহমান আহিল। তার বাবা জিয়াউর রহমান ও মা ফরিদা ইয়াসমিন, এই দম্পতি কক্সবাজার জেলার ঈদগাহ এলাকার বাসিন্দা।
জিয়াউর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ১৭ অক্টোবর কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার স্ত্রী যমজ সন্তান প্রসব করেন। পরপরই দ্বিতীয় সন্তানটি মারা যায়। মাত্র ২৮ সপ্তাহে দুই সন্তানের জন্ম হয়েছিল।
“জীবিত সন্তানটিরও অবস্থা খারাপ হয়ে যাওয়ায় চার দিন বয়সী ছেলেকে নিয়ে চট্টগ্রামে চলে আসি।”
চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। এরপর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শাহীন ও তার দলের সদস্যদের অধীনে শিশুটির চিকিৎসা শুরু হয়।
ডা. মোহাম্মদ শাহীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাধারণত ৩৭ থেকে ৪০ সপ্তাহ গর্ভে থাকার পর শিশু ভূমিষ্ট হয়। এই শিশু দুটি মাত্র ২৮ সপ্তাহ বয়সে জন্ম নেয়।
চিকিৎসা নিতে আসা চার দিন বয়সের শিশুটিকে এনআইসিইউতে রাখা হয়। শারীরিক অপূর্ণতার ঘাটতি মেটাতে এই সময়ে ৩৭ বার তাকে রক্ত ও রক্তের বিভিন্ন উপাদান দেওয়া হয়। পাশাপাশি ভেন্টিলেশন ও সিপিএপি সাপোর্টও দেওয়া হয়।
“বার বার শ্বাসজনিত সমস্যা হওয়ায় তুরস্ক থেকে থেকে আনা ওষুধ শিশুটির শরীরে দিতে হয়। এর মাঝে একদিন তার অবস্থা খারাপের দিকে যাওয়ায় ১৭ ঘণ্টা লাইফ সাপোর্টেও রাখতে হয়।”
ডা. শাহীন বলেন, “পরিপূর্ণ সময়ের আগে হওয়া শিশুদের বাঁচানো সহজ নয়। তবে আমি ও আমার দল যথাথথ চেষ্টা করে এ শিশুটিকে সুস্থ ও নতুন জীবন দিতে পারায় খুব ভালো লাগছে।”
৪৭ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে শিশুটি নিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা শনিবার দুপুরে বাড়ি ফিরে যায়।
শিশুটির বাবা জিয়াউর রহমান বলেন, “ছেলে এখন ভালো আছে। চিকিৎসকরা অক্লান্ত চেষ্টা করেছেন। আমার পরিবারের সবাই এখন খুশি।”