পাথরঘাটায় বিস্ফোরণ: চারজনের সংসার, মুহূর্তেই হারালো দুইজন

বাবা-মা আর দুই ছেলে- সকালেও ছিল চারজন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হয়ে গেল দুইজন। চট্টগ্রামের পাথরঘাটার বিস্ফোরণে স্ত্রী আর বড় ছেলেকে হারিয়ে আইনজীবী আতাউর রহমানের এখন তাই মাতমের সময়।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2019, 09:59 AM
Updated : 17 Nov 2019, 10:05 AM

সকালে বড় ছেলে সেইন্ট প্লাসিড স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র আতিকুর রহমান শুভকে (৭) প্রাইভেট পড়াতে পাথরঘাটা নজু মিয়া লেইন ৪ নম্বর গলির ফারুকের বিল্ডিংয়ের বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন আতাউরের স্ত্রী জুলেখা খানম ফারজানা (৩২)।   

পথে বড়ুয়া বিল্ডিংয়ের বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত দেয়ালের নিচে চাপা পড়েন মা-ছেলে।

খবর পেয়ে ছোট ছেলে ব্রাদার ফ্লাভিয়ান স্কুলের নার্সারির ছাত্র আসিফুর রহমান শুভ্রকে (৫) নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন আতাউর রহমান। আসিফের গায়ে তখনও স্কুলের পোশাক।

স্ত্রী আর এক সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় আতউরের বিলাপে ভারি হয়ে ওঠে হাসপাতালের পরিবেশ। ছোট্ট আসিফও যেন বিহ্বল।

নিহত আতিকুরের গৃহ শিক্ষিকা এলিনা বিশ্বাস হাসপাতালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আগামীকাল থেকে আতিকুরের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। তাই সকালে তাকে পাথরঘাটায় এক শিক্ষকের বাসায় প্রাইভেট পড়াতে নিয়ে যাচ্ছিলেন তার মা।

“এর আগে সকালে ছোট ছেলেকে তিনি নিজে স্কুলে দিয়ে আসেন। এরপর বাসায় ফিরে বড় ছেলেকে নিয়ে বের হন। বড়ুয়া বিল্ডিংয়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মা-ছেলে দেয়াল চাপা পড়েন।”

এই ঘটনায় বেলা দেড়টা পর্যন্ত নিহত সাতজনের মধ্যে জুলেখা ও আতিকুর ছাড়া আরও দুইজনের পরিচয় জানা গেছে।

তারা হলেন- পটিয়ার মেহের আটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অ্যানি বড়ুয়া (৪০), রঙ মিস্ত্রি নুরুল ইসলাম (৩১)।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন আহত ১০ জন। তদের মধ্যে একজন ডরিন তৃষা গোমেজ (২৩) পাথরঘাটা সেইন্ট জোন্স গ্রামার স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা।   

তিনি জানান, রিকশায় করে স্কুলে যাওয়ার সময় হঠাৎ বিকট শব্দ হয়, তারপর দেয়াল ভেঙে পড়ে তার রিকশার ওপর।

এছাড়াও আহত হয়েছেন ইউসুফ (৪০), ইসমাইল (৩০) ও আবদুল হামিদ (৪২) নামের তিন রিকশা আরোহী। এক রিকশায় করে তারা ফিশারিঘাটের দিকে যাচ্ছিলেন।  

বিস্ফোরণে ছিটকে আসা দেয়ালের অংশ পড়ে তারা হাতে-মাথায় ও শরীরের অন্যান্য অংশে আঘাত পেয়েছেন।