‘ঘরে দেশলাই জ্বালতেই বিস্ফোরণ’

সকালে পূজার ঘরে মোমবাতি জ্বালাতে দেশলাইয়ের কাঠি জ্বালিয়েছিলেন চট্টগ্রামের পাথরঘাটার ব্রিক ফিল্ড রোডের বাসিন্দা সন্ধ্যা নাথ। সঙ্গে সঙ্গে বড়ুয়া বিল্ডিং নামের ওই ভবনের নিচতলায় বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানিয়েছেন চল্লিশোর্ধ্ব এই নারী।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2019, 09:49 AM
Updated : 17 Nov 2019, 12:54 PM

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ধারণা, গ্যাস লাইনের ত্রুটি থেকে ওই বাসায় গ্যাস জমে গিয়েছিল। সকালে আগুনের স্ফুলিঙ্গ পেয়ে পুরো ঘর বিস্ফোরিত হয়।  

রোববার সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনায় সাতজনের প্রাণ গেছে। আহত হয়েছেন সন্ধ্যা নাথ ও তার বড় বোনের মেয়ে অর্পিতা নাথসহ অন্তত ১০ জন।

তাদের মধ্যে দগ্ধ অর্পিতা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। আর সন্ধ্যা ভর্তি আছেন ক্যাজুয়ালটি বিভাগে।

অর্পিতার বাবা কাজল দেবনাথ, মা মনিবালা নাথ এবং ভাই অর্নব নাথও ওই বাসায় থাকেন। তবে তারা কেউ আহত হননি।

সন্ধ্যা নাথ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকালে পূজার ঘরে গিয়ে মোমবাতি জ্বালানোর জন্য ম্যাচের কাঠি জ্বালাতেই সাথে সাথে বিস্ফোরণ হয়। কীভাবে কী হয়েছে বুঝতেও পারিনি।”

বিস্ফোরণে ওই ভবনের নিচতলার দেয়াল ও সীমানাপ্রাচীর ধসে রাস্তার ওপর পড়লে পথচারী ও চলতিপথের যাত্রীরাও হতাহত হন। বড়ুয়া বিল্ডিংয়ের পাশের ভবন এবং উল্টো দিকের ভবনের নিচতলার দোকানও বিস্ফোরণের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।   

পাশের ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে বিস্ফোরণের মুহূর্তে রাস্তার দৃশ্য।

নিচতলায় অর্পিতাদের বাসার পূজার ঘরটি ছিল রান্নাঘরের লাগোয়া। আর বাইরের দিকে সীমানা দেয়াল ঘেঁষে ছিল গ্যাস রাইজার। 

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ মো. আবদুর রউফ সাংবাদিকদের বলেন, “আহতদের সাথে কথা বলে মনে হয়েছে ওই বাসায় কোনোভাবে গ্যাস জমে ছিল। সে কারণেই বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে।”

একই ধরনের কথা বলেছেন ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক পূর্ণচন্দ্র মুৎসুদ্দী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হয়ত রাইজারে কোনো সমস্যা ছিল, হয়ত লিকেজ থেকে গ্যাস বের হয়ে জমে গিয়েছিল। সকালে বাসায় কেউ আগুন ধরালে তাতে বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে।”

তবে দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসা কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) জিএম (মার্কেটিং) আ ন ম সালেক সাংবাদিকদের বলেন, গ্যাস লাইনে ত্রুটি থাকার কোনো প্রমাণ তারা পাননি।

“ওই বাসার গ্যাসের চুলা অক্ষত আছে। লাইনে লিকেজের কোনো আলামত আমরা পাইনি। ঘরের ভিতরে যেসব কাপড় শুকানোর জন্য ছিল সেগুলোও অক্ষত আছে। বিস্ফোরণে সীমানা দেয়াল গ্যাসের রাইজারে ওপর পড়ায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে।”

তাহলে বিস্ফোরণের কারণ কী জানতে চাইলে আ ন ম সালেক বলেন, “সেটি তদন্ত করে বলা যাবে।”