পাথরঘাটায় বিস্ফোরণ: বেরিয়েছিলেন স্কুলের পথে, পৌঁছাতে পারেননি

প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার প্রথম, তাই ব্যস্ততা ছিল সকাল থেকে। ঘরের কাজ গুছিয়ে পথে নেমেছিলেন পটিয়ার মেহের আটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অ্যানি বড়ুয়া।

মিন্টু চৌধুরী চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2019, 07:18 AM
Updated : 17 Nov 2019, 08:22 AM

কিন্তু স্কুলে পৌঁছানোর আগেই গ্যাস লাইনের বিস্ফোরণে বড়ুয়া বিল্ডিংয়ের ধসে পড়া দেয়ালের নিচে পড়ে হারিয়ে গেলেন তিনি।   

রোববার সকালে নগরীর পাথরঘাটা ব্রিক ফিল্ড রোডে বড়ুয়া বিল্ডিংয়ের নিচতলায় ওই বিস্ফোরণে যে সাতজন মারা গেছেন, তাদের একজন অ্যানি বড়ুয়া (৪০)।

পটিয়ার উনাইনপুরার পলাশ বড়ুয়ার স্ত্রী অ্যানি। পলাশ বড়ুয়া শিকলবাহা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রপ্রকৌশলী। এই দম্পতির অষ্টম ও তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া দুই ছেলে আছে।

দুর্ঘটনাকবলিত বড়ুয়া বিল্ডিংয়ের পাশের একটি ভবনে বসবাস এই পরিবারের।

অ্যানি বড়ুয়া

অ্যানির ছোট ভাই অনিক বড়ুয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, স্কুলে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা কেন্দ্রে তার দিদির দাত্বি পালনের কথা ছিল।

“সকালে স্কুলে যেতে বাসা থেকে বের হয়। এসময় হঠাৎ বিকট শব্দে বড়ুয়া বিল্ডিংয়ের দেয়াল ভেঙে পড়লে চাপা পড়ে দিদি।”

হাসপাতালে অ্যানির স্বামী পলাশকে স্বজনদের জড়িয়ে ধরে আহাজারি করতে দেখা গেছে।

নিহতদের মধ্যে অ্যানি বড়ুয়া ছাড়াও আরেকজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি রঙ মিস্ত্রি নূরুল ইসলাম (৩১)।

কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুবের খিল এলাকার আবদুল হামিদের ছেলে নূরুল নগরীর শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন বাস্তুহারা কলোনিতে থাকেন। তার এক বছর বয়সী একটি সন্তান আছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রঙ মিস্ত্রি নূরুল ইসলামের স্বজনদের কান্না

সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নূরুল ইসলামের স্ত্রী সাদিয়া সুলতানার আহাজারিতে হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

নূরুলের ভাগ্নে মেহেদী হাসান জানান, পাথরঘাটার ওই এলাকায় একটি ভবনে রঙের কাজ করছিলেন তার মামা। সকালে মামার সঙ্গে সেখানে তিনিও এসেছিলেন।

“ঘটনার সময় মামা ওই বিল্ডিং (বড়ুয়া বিল্ডিং) এর সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। আমি ছিলাম যে বিল্ডিংটাতে কাজ চলতেছে সেটার ছাদে।”

বিস্ফোরণের আহত ১০ জন চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের দুইজন বড়ুয়া বিল্ডিংয়ের নিচতলার বাসিন্দা অর্পিতা নাথ এবং সন্ধ্যা নাথ। অর্পিতা আছেন বার্ন ইউনিটে।