এরা হলেন- চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী আবুল খায়ের ভুঁইয়া (৪৫) ও মিরসরাই উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন (৪৫)।
নির্বাচন কমিশনের অনুমতি পাওয়ার পর মঙ্গলবার তাদেরকে নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে সিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া জানিয়েছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এনআইডি জালিয়াতির ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে এই দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন হেফাজতে চেয়ে চট্টগ্রামের আদালতে আবেদন করা হয়। আদালত সাত দিন হেফাজতের আদেশ দিয়েছ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজেশ জানান, এই দুজনকে মামলার ১০ আসামি গ্রেপ্তার করা হলো। এর মধ্যে আটকে আগেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
গত অগাস্টে এক রোহিঙ্গা নারী ভুয়া এনআইডি সংগ্রহ করে চট্টগ্রামে পাসপোর্ট নিতে গিয়ে ধরা পড়ার পর জালিয়াত চক্রের খোঁজে নামে নির্বাচন কমিশন; আটকে দেয় রোহিঙ্গা সন্দেহে অর্ধশত এনআইডি বিতরণ।
এ ঘটনায় চট্টগ্রামের ডবলমুরিং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা পল্লবী চাকমা বাদি হয়ে কোতোয়ারী থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তভার পায় কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।
জয়নালের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে মোস্তফা ফারুক নামে প্রকল্পের অধীনে কারিগরি সহায়তা কর্মীকে এবং তার দেওয়া তথ্যে আইডিইএ প্রকল্পের কারিগরি বিশেষজ্ঞ শাহনুর মিয়াকে ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শাহনূর দেশের বিভিন্ন উপজেলার পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সার্ভারে প্রবেশ করতে পারতেন তার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের এনআইডি তৈরি করে দেওয়া হতো বলে করিয়ে দিতেন বলে অভিযোগ।
এরমধ্যে কোতোয়ালি থানার ডেটা এন্ট্রি অপারেটর মো. শাহীন, বন্দর থানার ডেটা এন্ট্রি অপারেটর মো. জাহিদ এবং ডবলমুরিং থানার ডেটা এন্ট্রি অপারেটর পাভেল বড়ুয়াকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
এদের মধ্যে শাহীন শাহনূর মিয়ার স্ত্রীর বড় ভাই। গ্রেপ্তার আটজনের মধ্যে শাহনূর, মোস্তফা, শাহীন, জাহিদ, পাভেল এনআইডি প্রকল্পের অধীনে কর্মরত। বাকি দুজন জয়নালের বন্ধু।
এদের মধ্যে আদালতে জয়নাল, মোস্তফা ও শাহনূরের জবানবন্দি দিয়েছে। তাতে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা, স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মচারীসহ এনআইডি জালিয়াতিতে অন্তত ৩০ জনের নাম এসেছে বলে তদন্ত কর্মকর্তা জানা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এই কর্মচারিরা ২০১৪ সাল থেকে জালিয়াতি করে রোহিঙ্গাদের ভোটার করা ও এনআইডি দেওয়ার কাজ শুরু করলেও গত তা ব্যাপকতা পায়।
পুলিশের তদন্তে যাদের নাম এসেছে অতীতে, তারা সবাই একসাথে মিলেমিশে কাজ করলেও টাকার ভাগ নিয়ে বছরখানেক আগে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়; ভেঙ্গে যায় ‘ঐক্য’।
নিজেদের বিরোধে একে একে বেরিয়ে আসছে জালিয়াত চক্রের সাথে জড়িতদের নাম। এদের মধ্যে কর্মচারিদের পাশাপাশি অনেক কর্মকর্তার নামও জানতে পেরেছে তারা।