মসজিদকর্মী ফেললেন শিশুর ডায়াপার, তা নিয়ে ফেইসবুকে তোলপাড়

ফেইসবুকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে চট্টগ্রামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, যিনি আরেক সহযোগীকে নিয়ে শিশুর ব্যবহৃত ডায়াপারের ভিডিও করে তা নামকরা একটি হোটেল থেকে ফেলা ‘মানব ভ্রুণ’ বলে প্রচার করেছিলেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Nov 2019, 12:20 PM
Updated : 12 Nov 2019, 12:25 PM

সোমবার রাতে নগরীর স্টেশন রোড এলাকা থেকে সাঈদ হোসেন কাননকে (২৭) গ্রেপ্তার করা হয় বলে কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানিয়েছেন।

কানন নগরীর রেয়াজ উদ্দিন বাজারের বানিয়াটিলা এলাকায় একটি ডিমের দোকানের কর্মচারী। তিনি কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার কান্দিরপাড় ইউনিয়নের হামিরাবাগ গ্রামের কোরবান আলীর ছেলে।

এ ঘটনায় মো. পারভেজ (২৫) নামের আরেকজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে ওসি মহসীন জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শিশুর ব্যবহৃত ডায়াপার খোলা জায়গায় ফেলে দেওয়ার পর তা ‘মানব ভ্রুণ’ উল্লেখ করে ফেইসবুকে ভিডিও ও ছবি প্রচার করেছিলেন এই দুজন।

“গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেলে কানন ওই ভিডিও ধারণ করে এবং ধারা বর্ণনা দেয়, যা সেদিন সন্ধ্যায় পারভেজের ফেইসবুক অ্যাকাউনট থেকে প্রচার করা হয়।”

প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরে ওসি মহসীন বলেন, জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ কমপ্লেক্সের দক্ষিণে টিনশেড ঘরগুলোতে মসিজদ কমপ্লেক্সের কর্মচারীরা থাকেন। সেখানকার বাসিন্দা মসজিদের একজন কর্মচারী তার শিশুর ব্যবহৃত ডায়াপার ঘরের পেছনের খোলা জায়গায় ফেলে দেন। বৃষ্টিতে ভিজে সেগুলো ফুলে যায়।

ওই টিনশেড ঘরগুলোর পেছনের এই ফাঁকা জায়গার পরেই পাঁচতাকা র‌্যাডিসন ব্লু বে ভিউ হোটেল।

“কানন ও পারভেজ ওই সব ডায়াপারের ভিডিও ধারণ করে সেগুলো বিপরীত পাশের ওই হোটেল থেকে ফেলে দেওয়া ‘মানব ভ্রুণের’ ছবি বলে ফেইসবুকে প্রচার করে।

একদিনেই ভিডিওটি পাঁচ হাজার শেয়ার হয় বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, “গুজব ছড়িয়ে দেওয়া ভিডিওটি প্রচারের পর তারা মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয় এবং ফেইসবুক আইডি ডিঅ্যাক্টিভেট করে দেয়।

“কানন জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, তারা জেনেশুনে ফেইসবুকে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে এ কাজ করেছে।”

কোতোয়ালী থানার এসআই কামাল হোসেন খান বাদী হয়ে এ ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় কাননকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫, ৩১ ও ৩৫ ধারায় করা মামলায় ‘আক্রমণাত্মক, মিথ্যা, ভীতি প্রদর্শন, মানহানিকর ও উস্কানিমূলক তথ্য’ প্রচারের মাধ্যমে বিদ্বেষ সৃষ্টি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টসহ সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।