জি কে শামীমকে দিয়াজ হত্যামামলার আসামি করতে আবেদন

গ্রেপ্তার বিতর্কিত ঠিকাদার জি কে শামীমকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের মামলার আসামি করতে আদালতে আবেদন হয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Oct 2019, 04:29 PM
Updated : 31 Oct 2019, 04:29 PM

দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রবিউল আলমের আদালতে এ আবেদন করেন।

চার বছর আগে ক্যাম্পাসের নিজের ঘরে দিয়াজের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর তার পরিবার দাবি করেছিল, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং তা ঘটানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা উন্নয়ন কাজ পাওয়া নিয়ে।

২০১৬ সালের নভেম্বরের শুরুর দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবন নির্মাণে ৭৫ কোটি টাকার কাজ পায় জি কে শামীমের প্রতিষ্ঠান সার্স দ্য বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স-জি কে বিল্ডার্স লিমিটেড (জেভি)।

ওই বছরের ২০ নভেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেইট এলাকার বাসায় শয়নকক্ষে দিয়াজের ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক যুগ্ম সম্পাদক দিয়াজের মা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মচারী।

দিয়াজ ইরফান চৌধুরী

জাহেদার আবেদনটি গ্রহণ করে দিয়াজ হত্যামামলায় জি কে শামীমের সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা তদন্ত করতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল মনসুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৭৫ কোটি টাকার ওই কাজটি পাইয়ে দিতেই দিয়াজকে হত্যা করা হয় বলে তখন এবং সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

“ওই কাজের ওয়ার্ক অর্ডারটি (কার্যাদেশ) গোলাম কিবরিয়া (জি কে) শামীমমের নামে। তাই বাদী মনে করছেন, এই ঘটনায় তিনি জড়িত।”

মনসুর বলেন, “আদালত আবেদনটি গ্রহণ করে এ বিষয়ে তার (জি কে শামীম) সম্পৃক্ততা আছে কি না, তদন্ত করতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা পরবর্তী তদন্ত করবেন।”

মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন।

জি কে শামীম

দিয়াজের বোন জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী নিপা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৭৫ কোটি টাকার সেই ওয়ার্ক অর্ডারটি যেহেতু জি কে শামীমের নামে, তাই এই খুনের ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।”

দিয়াজের মৃত্যুর পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে এই নতুন কলা ভবনের নির্মাণকাজের দরপত্রসহ কয়েকটি বিষয়ে ‘ষড়যন্ত্র’ করে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে অভিযোগ করেছিল।

ওই ঠিকাদারির কাজ সংশ্লিষ্ট একটি চেক দিয়াজ পেয়েছিলেন বলে তার মৃত্যুর পর ক্যাম্পাসে গুঞ্জন ছিল। তবে সেই চেক তিনি ভাঙাতে পারেননি বলে জানিয়েছিলেন তার ভগ্নিপতি।

দিয়াজের লাশের প্রথম ময়নাতদন্তের পর এটি ‘আত্মহত্যার ঘটনা’ উল্লেখ করা হয়েছিল। তা নিয়ে আপত্তি জানান দিয়াজের মা। এরপর দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্তে মেলে হত্যার আলামত।

দিয়াজ হত্যামামলায় আসামিদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপুসহ সংগঠনটির বেশ কয়েকজন নেতা রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেনও রয়েছেন আসামির তালিকায়।

অন্য আসামিরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জামশেদুল আলম চৌধুরী, কর্মী রাশেদুল আলম জিশান, আবু তোরোব পরশ, মনসুর আলম, আবদুল মালেক, মিজানুর রহমান, আরিফুল হক অপু ও মোহাম্মদ আরমান।