সাজা থেকে বাঁচতে বাবার নাম-ঠিকানা পরিবর্তন

মঞ্জুরুল আলম চট্টগ্রামের খুলশী থানার দুটি মাদক মামলায় আসামি। মামলা দুটিতে তিনি আসামি হলেও বাবা, মায়ের নাম আর ঠিকানা ভিন্ন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2019, 05:22 PM
Updated : 21 Oct 2019, 05:22 PM

একটি মামলায় কারাগারে গিয়ে জামিন নিয়ে পুনরায় অন্য মামলায় জামিন আবেদনের পর পুলিশ জানতে পারে, মামলা দুটির আসামি একই ব্যক্তি। সাজা থেকে বাঁচতে তিনি পৃথক ঠিকানাও ব্যবহার করেন।

এই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আদালতে রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন- পিবিআই।

পুলিশ জানায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি খুলশী থানার আমবাগান এলাকা থেকে ফারুক নামে এক ব্যক্তিকে ১০০টি ইয়াবাসহ গ্রেপ্তারের পর তারা জানতে পারে, এই ব্যক্তি বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক একটি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে ইয়াবা পাচার করেন।

পরে মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে এবং জালাল নামে কুরিয়ার সার্ভিসের এক কর্মচারীকেও গ্রেপ্তার করে। ঘটনার সত্যতা পেয়ে পিবিআই ফারুক, জালাল ও মঞ্জুরুল আলমকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেয়।

ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই-চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ফারুক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছিলেন মঞ্জুরুল আলম ওরফে মঞ্জু নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে সে ইয়াবা সংগ্রহ করে জালালের মাধ্যমে তৈরি পোশাকের ভেতরে করে যুক্তরাষ্ট্রে ইয়াবা পাচার করেন।  সেখানে হাসিব ও নাজমুল নামে দুই ব্যক্তি ইয়াবাগুলো সংগ্রহ করে থাকেন।

“মামলাটি তদন্ত করে গত ১৮ অগাস্ট আমরা গ্রেপ্তার ফারুক, জালাল ও পলাতক মঞ্জুরকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিই এবং অন্যদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আবেদন করি।”

এদিকে গত ২৪ অগাস্ট রাতে ষোলশহর এলাকা থেকে খুলশী থানা পুলিশের হাতে ৩০২ পিস ইয়াবাসহ মঞ্জুর আলম ও আব্দুল মতিন নামে দুই ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়।

খুলশী থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর সে নিজেকে মঞ্জুর আলম, বাবার নাম নজির আহমেদ ওরফে কালা মিয়া এবং মায়ের নাম উল্লেখ করে আয়েশা খাতুন। আর ঠিকানা উল্লেখ করেন নগরীর ডবলমুরিং থানার হাজী পাড়ায়।

এই মামলায় মঞ্জুর জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন।

সন্তোষ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ইয়াবা পাচারের মামলাটি আমরা তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারি মঞ্জুরুলের বাড়ি টেকনাফের গোদারবিল এলাকায়। তার বাবার নাম আমির হোসেন ও মায়ের নাম আজম বাহার এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ….।

তিনি বলেন, মঞ্জু যুক্তরাষ্ট্রে ইয়াবা পাচারের মামলায় সশরীরে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন ২৩ সেপ্টেম্বর। আদালত অভিযোগপত্রে তার নাম থাকায় জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

 “মঞ্জুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশের কপি আমাদের কাছে আসার পর আমরা কারাগারে গিয়ে জানতে পারি আমাদের মামলার আসামি মঞ্জুরুল ও ২৪ অগাস্ট খুলশী থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া মঞ্জুর একই ব্যক্তি। তার বাবা, মা ও ঠিকানাও ভিন্ন।”

পিবিআই কর্মকর্তা সন্তোষ বলেন, আসামিরা নাম ঠিকানার ভুল তথ্য দিয়ে মামলা থেকে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা করে। এতে করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মামলার তদন্ত করতে গিয়ে অনেক সময় সমস্যায় পড়তে হয়।

“মঞ্জুর আসল ঠিকানা ও বাবা, মার সঠিক নাম জানতে আমরা আদালতে রিমান্ড আবেদন করেছি। তাকে হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারলে প্রকৃত তথ্যটি জানা যাবে।”