আগাছা-পরগাছার ‘ফেইসবুক রাজনীতিতে’ অতিষ্ঠ: হাছান মাহমুদ

আসন্ন সম্মেলনকে সামনে রেখে দল ‘পরিষ্কারের’ কাজে হাত দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2019, 02:59 PM
Updated : 19 Oct 2019, 03:04 PM

শনিবার বিকালে নগরীর জে এম সেন হল মাঠে বাংলাদেশ তাঁতী লীগ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আগামী সম্মেলনকে সামনে রেখে আমরা দলকে পরিষ্কার করার কাজে হাত দিয়েছি। ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো থেকেও আগাছা-পরগাছাদের দূর করতে হবে।

“কিছু কিছু আছে শুধু ফেইসবুকে রাজনীতি করেন, ছবি একটা তুলবে সেটা পোস্ট দেবে। এদের জন্যও আমরা অতিষ্ঠ। এদের ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে।”

তাঁতী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে হাছান মাহমুদ বলেন, “আমরা পরপর তিনবার রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকার কারণে আমাদের দলে অনেক আগাছা-পরগাছা ঢুকেছে, অনেকে নানাভাবে পদ পেয়েছে।

“তাদের সমস্ত পর্যায় থেকে দূর করতে হবে। বিরোধীদলে থাকার সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের যারা নির্যাতন করেছে, তারা যেন কোনোভাবেই দলে প্রবেশ করতে না পারে।”

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন।

“আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের রাজনীতি করে। আমরা যদি সাধারণ মানুষের চাইতে অতিমাত্রায় সমৃদ্ধশালী হয়ে যাই, অনিয়ম ও অপরাজনীতির মাধ্যমে বিশাল সম্পদের অধিকারী হই তাহলে কিন্তু আমাদের এই দলের প্রতিনিধিত্ব করবার রাজনৈতিক যোগ্যতা কিংবা নৈতিকতা কেনোটাই থাকবে না।”

আওয়ামী লীগের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নওফেল বলেন, “আমি মঞ্চে দাঁড়িয়ে জোরে ভাষণ দিলাম। আমাকে খুশি করতে আপনারা আরও জোরে ‘ভাই ভাই’ স্লোগান তুললেন। আর আমি ভাবলাম আমার অনেক অনুসারী আছে তাহলে লক্ষ্য অর্জন হবে না। ভাইয়ের নয়, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করতে হবে।”

তিনি বলেন, “আজকে আমার পদ আছে। কাল পদ নাও থাকতে পারে। পদ থাকবে না বলে আমি কী আওয়ামী লীগের কর্মী থাকব না? বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করব না?”

আরেক বিশেষ অতিথি সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, “চট্টগ্রাম মহানগরীতে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের কোনো নেতাকর্মী অনৈতিক কাজে লিপ্ত হোক তা চাই না। তাদের চিহ্নিত করে যাতে কোনো পদ পদবীতে আসীন হতে না পারে তা নিশ্চিত করা হবে।

“কোনো মাদকাসক্ত যেন সংগঠনে থাকতে না পারে, কেউ যদি জুয়ার আসরে বা ক্যাসিনোতে জড়িত থাকে তারা যেন দলের সাথে যুক্ত থাকতে না পারে, এটা বাস্তবায়ন করা আমাদের জন্য ফরজ। প্রধানমন্ত্রী যা চাইবেন সেটাই আমাদের চাওয়া।”

চট্টগ্রাম মহানগর তাঁতী লীগের আহ্বায়ক নুরুল আমিন মানিকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেনী সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী ও নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী।

সম্মেলনের উদ্বোধক ছিলেন তাঁতী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মো. শওকত আলী।

বক্তব্য রাখেন তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক খগেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ, কার্যকরী সভাপতি সাধনা দাশ গুপ্ত, মহানগর তাঁতী লীগের সদস্য সচিব রত্নাঙ্কর দাশ টুনু প্রমুখ।