ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ছয় বছর আগে জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় নয়জনকে মৃত্যুদণ্ড, চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Oct 2019, 09:41 AM
Updated : 14 Oct 2019, 12:46 PM

চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. আবদুল হালিম সোমবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় বিচারক রায়ে তিনজনকে খালাস দিয়েছেন বলে এ আদালতের পিপি আইয়ুব খান জানান। 

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- হারুন মিয়া, তার দুই ছেলে মো. সজিব ও মো. রাজিব; শাওন, আমিন, রবু, মমিন, মহসিন ও আবু তাহের। এদের মধ্যে মহসিন ও আবু তাহের ছাড়া বাকি সাতজন পলাতক।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মতিন, শাহ পরান, শামীম ও খোকন মিয়া। তাদের মধ্যে শামীম পলাতক।

খালাস পাওয়া তিনজন হলেন- নয়ন মিয়া, মোসলেম মিয়া ও বিল্লাল মিয়া। এদের মধ্যে নয়ন মিয়া পলাতক।

আইনজীবী আইয়ুব খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আসামিদের সঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম সরকারের (৩৫) মৎস্য প্রকল্পের অংশদারীত্ব এবং ‘সমাজ’ নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল।

“২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর রাতে জাহাঙ্গীর আলম ওয়াজ শুনে ফেরার পথে গৌরিপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পাড়া গ্রামের আবু ইউসুফের বাড়ির সামনে আসামি সজিব তার বুকের ডান পাশে ছুরি দিয়ে প্রথমে আঘাত করে। পরে অন্য আসামিরা কুপিয়ে ও পিটিয়ে তাকে ফেলে যায়।

“স্থানীয়রা জাহাঙ্গীর আলমকে উদ্ধার করে গৌরিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”

এ ঘটনায় জাহাঙ্গীরের বাবা ফজর আলী বাদি হয়ে থানায় মামলা করেন।

রায় ঘোষণার পর ফজর আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার ছেলের তিনটা সন্তান। ছোট নাতনি পাঁচ মাস বয়সের সময় বাবা হারা হয়েছে।

“মাছের প্রজেক্ট আর সমাজ নিয়ে ঝামেলা থাকায় আসামিরা তাকে খুন করে। আসামিদের অনেকে পলাতক। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করে যেন সাজা কার্যকরের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

আইনজীবী আইয়ুব খান জানান, ৩০২/৩৪ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নয় আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে।

“যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।”

এ মামলায় ২০১৪ সালের ১৬ মার্চ ১৬ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। অভিযোগ গঠন করা হয় ২০১৫ সালের ১ ডিসেম্বর।

মামলায় ২২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত রায় দেয়।