ক্লাবে অভিযানের নামে ‘সম্মানহানি’, ক্ষুব্ধ হুইপ সামশুল

ক্যাসিনো বন্ধে চট্টগ্রামের ক্রীড়া ক্লাবগুলোতে অভিযানে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, যিনি চট্টগ্রাম আবাহনীর মহাসচিবও।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2019, 03:07 PM
Updated : 25 Sept 2019, 11:36 AM

তিনি বলেছেন, “ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে, মদের বিরুদ্ধে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে। কিন্তু জুয়ার নামে ক্লাবগুলোতে অভিযান মানা যায় না।”

শনিবার চট্টগ্রামে আবাহনী, মোহামেডানসহ পাঁচটি ক্লাবে র‌্যাবের অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে একথা বলেন আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য।

প্রধানমন্ত্রীর বার্তা পাওয়ার পর গত সপ্তাহের শেষ ভাগ থেকে ঢাকার বিভিন্ন ক্রীড়া ক্লাবে অভিযান চালাচ্ছে র‌্যাব, যাতে ক্লাবগুলোতে অবৈধ ক্যাসিনোও মেলে।

ঢাকার পাশাপাশি  চট্টগ্রামে অভিযান চললেও একটি ক্লাবে ক্যাসিনো পাওয়ার কথা জানায় র‌্যাব। বাকিগুলোতে তাসের প্যাকেট পাওয়া যায়।

সামশুল হক বলেন, “আমাদের ক্লাবে অভিযানে তাসের প্যাকেট পাওয়া গেছে মাত্র। সেখানে তো ক্যাসিনো বা জুয়ার আসর ছিল না। আমার ক্লাবে ক্যাসিনো নেই, জুয়া নেই, মদ নেই। ক্লাবের মহাসচিব হিসেবে মনে করি, এতে সম্মানহানি হয়েছে।”

সামশুল হক চৌধুরী

“চট্টগ্রাম ক্লাব, সিনিয়র্স ক্লাব, অফিসার্স ক্লাবে সেখানেও তো তাস খেলা হয়। সেখানে তো অভিযান চালানো হয় না। আপনাদের সাংবাদিকদের প্রেস ক্লাবেও তো তাস খেলে, সেটা কি জুয়া?” ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন তিনি।

ক্রীড়া ক্লাবগুলোর আয়ের উৎস হিসেবে তাস খেলাকে দেখান সামশুল হক।

“তাস খেললে বোর্ড মানি দেয় ক্লাবকে। এসব পয়সা ক্লাবের কাজে ব্যবহার হয়। ফুটবল ফেডারেশন বা অন্য কোনো সংস্থা তো ক্লাবকে টাকা দেয় না। এইভাবে যদি অভিযান চালানো হয়, তাহলে লোকজন খেলাধুলা ছেড়ে চলে যাবে।”

অভিযান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীমও, তিনি বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনেরও সাধারণ সম্পাদক।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিভিন্ন ব্যবসায়ী সদস্যরা ক্লাবে এসে বসে সময় কাটায়। কার্ড খেলে। ডোনেশন দেয়।

“কার্ড খেলাকে যেভাবে প্রশাসন অবৈধ ও জুয়া বলছে, সেটা আমাদের খুব সংকীর্ণ করছে। পাশাপাশি আমাদের মনে ক্ষোভও আসছে।”

চট্টগ্রামে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে পাওয়া যায় এসব

শামীম বলেন, “তাস খেলা আমাদের ব্যবসা না। এটা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এটাকে তারা (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) জুয়ার সাথে যুক্ত করছে। তার সাথে আমি এক মত না। এটা চলমান থাকলে ভবিষ্যতে খেলাধুলা বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা আতঙ্কিত।”

তবে তিনি বলেন, কেউ ক্রীড়া ক্লাবের নামে ক্যাসিনো, বার চালালে তা বন্ধ করলে তার আপত্তি নেই।

“কিন্তু যেসব ক্লাবে সদস্য এবং তাদের বন্ধুরা এসে কার্ড খেলে ক্লাবকে কিছু ডোনেট করে, সেটা যদি বাধাগ্রস্ত করা হয়, তাহলে ক্লাব বন্ধ হয়ে যাবে। এটা চলতে থাকলে খেলাধূলা বন্ধ হয়ে যাবে। ছেলেপেলেরা বিপথগামী হবে।”

ক্লাবে অভিযান চালিয়ে সরকারের মূল উদ্দেশ্যকে বিতর্কিত করার চেষ্টা হচ্ছে কি না, সেই সন্দেহ প্রকাশ করেন শামীম।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী চাইছেন দেশকে সুন্দর করতে। তিনি টেন্ডারবাজি, অবৈধ উপার্জন বন্ধ করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে বিতর্কিত করতে এটা কেউ ইচ্ছে করে করছে কি না, সেটা আমাদের সন্দেহ। প্রধানমন্ত্রীর মেসেজ সঠিকভাবে ব্যবহার করছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা হোক।”