ঢাকায় বিভিন্ন ক্লাবে জুয়াবিরোধী চলমান অভিযানের মধ্যই শনিবার চট্টগ্রামে এই অভিযান হল।
চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদ, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও আবাহনী লিমিটেডে অভিযান চালায় র্যাব। আর পুলিশ অভিযান চালায় নগরীর ফ্রেন্ডস ক্লাব ও শতদল ক্লাবে।
সন্ধ্যায়ই নগরীর আইস ফ্যাক্টরি রোডের মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদে, সদরঘাট এলাকার মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব এবং হালিশহর এলাকার আবাহনী লিমিটেড ক্লাব ঘিরে ফেলেন র্যাব সদস্যরা।এরপর সাড়ে ৭ টার দিকে প্রথম মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্লাবে শুরু হয় অভিযান।
অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজামউদ্দিন মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদে সাংবাদিকদের বলেন, “এখানে জুয়া খেলা হত-এটা আমরা নিশ্চিত হয়েছি। জুয়া খেলার চিপ, কার্ড ও খাতাপত্র পেয়েছি। কিছু টেবিল পাওয়া গেছে সেগুলোতে জুয়ার আসর বসত বলে ধারণা করছি।”
অভিযানে এই ক্লাবে কাউকে পাননি র্যাব সদস্যরা।
এ বিষয়ে র্যাব-৭ এর উপ-অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার শাফায়েত জামিল ফাহিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ক্যাসিনোর কোনো সন্ধান পাওয়া যায় কি না সে বিষয়েই অভিযানের নির্দেশ ছিল।
“মুক্তিযোদ্ধা সংসদে ক্যাসিনো আইটেম পাওয়া গেছে। তবে ১৮ তারিখের (বুধবার) পর সেখানে কেউ আসেনি।”
চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদ ক্লাব পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে আছেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হারুন-আর-রসিদ।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চট্টগ্রাম মহানগরের সহ কমান্ডার খোরশেদ আলম বলেন, “তিন বছর আগে খসরু নামে একজনকে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকায় ক্লাবটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। বেশ কিছু দিন ধরে বৃষ্টি হলে পেছনের নালা দিয়ে ক্লাবে পানি ঢোকে।
“ক্লাবটি মেরামত করে না দেওয়ায় ছয় মাস আগে আর চুক্তি নবায়ন করেননি খোরশেদ। এরপর কয়েক মাস ধরে এখানে আর কার্ড খেলা হয় না।”
মোহামেডান-আবাহনীতেও ‘জুয়ার আলামত’
মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদে অভিযান শেষে আধা কিলোমিটার দূরে সদরঘাট এলাকার মোহামেডান ক্লাবে যায় র্যাবের অভিযান দল।
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি শাহ আলম বাবুল এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবুদ্দিন শামীম।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজামউদ্দিন বলেন, “এখানেও একই ধরনের আলামত মিলেছে। ধারণা করছি, চলমান অভিযানের কারণে তারা এসব (জুয়া) বন্ধ রেখেছে।”
এই তিন ক্লাবের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক মামলা হবে বলে জানান তিনি।
আবাহনী লিমিটেড পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে আছেন আওয়ামী লীগের সাংসদ এম এ লতিফ এবং সাধারণ সম্পাদক হুইপ সামশুল হক চৌধুরী।
রাত সোয়া ১২টায় র্যাব-৭ এর এক এসএমএসে জানানো হয়, ওই তিন ক্লাবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
ফ্রেন্ডস ক্লাবে শুধু ‘তাস’, শতদল খোলেনি
এদিকে রাত ৯টার পর নগরীর এস এস খালেদ রোডের ফ্রেন্ডস ক্লাব এবং আসকার দিঘীর পাড়ের শতদল ক্লাবে অভিযান চালায় পুলিশ।
ওই ক্লাবের তৃতীয় তলায় কয়েক প্যাকেট তাস ও একটি লুডুর বোর্ড দেখা গেছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মেহেদী হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ফ্রেন্ডস ক্লাবে কিছু কার্ড (তাস) পেয়েছি। তবে এখানে এখন কেউ জুয়া খেলে বলে মনে হয় না।
“আর শতদল ক্লাবটি তালাবন্ধ পাওয়া গেছে।”
চট্টগ্রামে শুক্রবার রাতেও জুয়াবিরোধী অভিযান চালানো হয়। নগরীর আলমাস মোড়ে ‘হ্যাং আউট’ নামের একটি ক্লাবে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখানে অনুমতি ছাড়া পুল ও স্নুকার খেলা হত, ওই ক্লাব মালিকের ছেলে খলিকুজ্জামান ও কর্মচারী রবিউল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।