এনআইডি জালিয়াতি: জয়নালের জবানবন্দিতে ‘আরও নাম’

জাতীয় পরিচয়পত্র এনআইডি জালিয়াতিতে গ্রেপ্তার চট্টগ্রাম নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2019, 01:06 PM
Updated : 11 Dec 2019, 10:08 AM

শনিবার বিকালে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু সালেম মো. নোমানের আদালতে জবানবন্দি দেন বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. কামরুজ্জামান।

বিবিডনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “তিনদিনের রিমান্ড শেষে জয়নালকে আদালতে হাজির করা হলে বিকালে জালিয়াতির ঘটনা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় সে।”

মামলার তদন্ত সংস্থা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, “জবানবন্দিতে জয়নাল জালিয়াত চক্রের আরও কয়েকজনের নাম বলেছে, তাদের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখা হবে।”

গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে জয়নাল আবেদীন ও তার দুই সহযোগীকে আটক করে পুলিশে দেন চট্টগ্রাম নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। জয়নালের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপও উদ্ধার করা হয় সেদিন।

পুলিশের ভাষ্য, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জয়নাল বলেছেন, চাকরির সুবাদে তার সঙ্গে ঢাকায় জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্পের অধীনে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া সাগর ও সত্য সুন্দর নামে দুই ব্যক্তির পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের সুবাদে তিনি সাগরের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকায় একটি ল্যাপটপ কেনেন। এ ল্যাপটপটির মাধ্যমে তিনি ডেটা তৈরির কাজ করে ঢাকায় পাঠাতেন। 

চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার নির্বাচন কর্মকর্তা পল্লবী চাকমা বাদি হয়ে করা মামলায় বলা হয়েছে, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসা নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জয়নাল আবেদীন জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম অফিস থেকে তিনি ডিএসএলআর ক্যামেরা, ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানার, সিগনেচার প্যাড প্রতি শুক্র, শনিবারসহ বন্ধের দিনগুলোতে গোপনে তার বাসায় নিয়ে যেতেন। বাসায় বসে সেসব সরঞ্জাম ব্যবহার করে তথ্য তৈরি (ডেটা ক্রিয়েট) করে মেইলে ঢাকায় সাগরের কাছে পাঠাতেন।

সাগর নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে অবৈধভাবে ঢুকে তথ্য আপলোডসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করে জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রিন্ট কপি এসএ পরিবহনের মাধ্যমে জয়নালের কাছে পাঠিয়ে দিতেন। প্রতিটি জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির জন্য জয়নাল রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা করে নিতেন বলে জানিয়েছে।

কোতোয়ালী থানায় মামলা হওয়ার পর সেটির তদন্তভার যায় সিএমপি কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কাছে।

এদিকে জয়নালের স্বীকারোক্তিতে আউট সোর্সিংয়ের ভিত্তিতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের টেকনিক্যাল সাপোর্ট স্টাফ মোস্তফা ফারুককে গ্রেপ্তার করে কাউন্টার টেররিজম।

তার কাছ থেকে দুইটি ল্যাপটপ, পেন ড্রাইভ, নির্বাচন কমিশনের মডেম, সিগনেচার প্যাড ও বেশকিছু এনআইডি প্রিন্টিংয়ের কাগজ জব্দ করা হয়।

তাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।